Site icon Jamuna Television

খুলনায় জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের দোতলা ভবনে অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে লিফট!

খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা পরিষদ, দু’টি ভবনই দুইতলা। ভবন দু’টির সিঁড়ি দিয়ে কয়েক যুগ ধরেই স্বাচ্ছন্দ্যে ওঠানামা করছেন জনপ্রতিনিধি, কমকর্তা, কর্মচারী ও সেবা প্রত্যাশীরা। গত ৩১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ক্যাপসুল লিফট’ স্থাপন করা হয়েছে। জোড়েশোরে আরেক ঐতিহ্যবাহী ভবন জেলা পরিষদেও চলছে লিফট বসানোর কাজ। লিফটের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

বৈশ্বিক এই মন্দায় দুইতলা ভবন দু’টিতে লিফটের প্রয়োজনীয়তায় হতবাক অনেকেই। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ সুতপা বেতজ্ঞ বলেন, এখানে বিলাসিতার কথা আর কী বলবো! বিলাসিতার সাথে আমার মনে হয়, এ ধরনের প্রকল্প নেয়া ও দেয়ার অর্থ হচ্ছে দুর্নীতিকে উস্কে দেয়া।

জেলা পরিষদ বলছে, প্রকল্পের মাধ্যমে লিফট স্থাপন করা হয়েছে। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কমকর্তা মো. আছাদুজ্জামান বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের বয়স বেড়ে গিয়েছে। স্যারের খুব কষ্ট হয় উঠতে। এটা প্রয়োজনের তাগিদেই হচ্ছে। বিলাসিতার কিছু নেই।

জানা যায়, বিদায়ী জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের কাছে একটি লিফট উপহার চেয়েছিলেন। তার অনুরোধই রক্ষা করেছেন চেয়ারম্যান। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কমকর্তা মো. আছাদুজ্জামান বলেন, আমরা একটা প্রকল্প নিয়েছিলাম। তৎকালীন জেলা প্রশাসক অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে আমাদের চেয়ারম্যান লিফটটি করে দিয়েছিলেন।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ সুতপা বেতজ্ঞ বলেন, এই অনুমোদনগুলো কীভাবে আসে? আমাদের সংকট তো এক জায়গায়। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নাই। জনগণের দিক থেকে কোনো তাগাদা নাই। এবং জনসম্পৃক্ত কোনো প্রকল্প নাই।

অনুরোধের বিষয়টি স্বীকার করেছেন খুলনার বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হেলাল হোসেন। টেলিফোনে তিনি বলেন, আমি থাকা অবস্থায় লিফটটি লাগানো হয়নি। আমি জেলা প্রশাসককে বলেছিলাম। পরে লাগানো হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাধারণ মানুষের দোহাই দিয়ে লিফট স্থাপনের কথা বলা হলেও বাস্তবিক অর্থে তা ব্যবহার হবে শুধুমাত্র কমকর্তাদের জন্য।

/এম ই

Exit mobile version