Site icon Jamuna Television

সিরাজগঞ্জে নয়া আতঙ্ক বেজি; ২০ দিনে কামড়ালো ১২০ জনকে

সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ:

সিরাজগঞ্জে মানুষের এখন বড় আতঙ্কের নাম বেজি। হঠাৎ করেই জেলাতে বেড়ে গেছে বেজির উপদ্রব। গত ২০ দিনে সিরাজগঞ্জে অন্তত ১২০ জনের অধিক ব্যক্তি বেজির কামড়ের শিকার হয়েছেন। হঠাৎ করে বেজির এমন আচরণে অবাক স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের দাবি, খুব ভোরে এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু করে মধ্য রাতের কিছু সময় পর্যন্ত বেজির আক্রমণ বেড়ে যায়। মানুষ দেখলেই দিচ্ছে কামড়।

এদিকে এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, বেজির কারণে শরীরে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বেজির কামড়ের ফলে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ সদর ও এর আশপাশের উপজেলায় বেজির কামড়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বেজি দিনের বেলা খাবার সংগ্রহ করে আর রাতে তাদের গর্তে থাকতে পছন্দ করে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে বেজি সকালে ও সন্ধ্যার দিকে মানুষকে বেশি আক্রমণ করছে। সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার গোশালা, মালশাপাড়া, এস,এস রোড, ধানবান্ধী এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেজির কামড়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। হঠাৎ করে বেজির কামড়ের মাত্রা বেড়ে যাবার কারণে অনেকই দিনে ও রাতে পথ চলতে ভয় পাচ্ছেন। বিশেষ করে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরা।

বেজির কামড়ের শিকার হওয়া গোশালা এলাকার রাজিব জানান, আমি সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ করে বেজি দৌড়ে এসে কামড়িয়ে চলে যায়। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে আমার। একই এলাকায় এক গৃহিনী দুপরে বাড়ির বারান্দায় রান্নার জন্য সবজি কাটার সময় বেজি তার হাতে কামড় দেয়। অন্যদিকে মাসাপাড়া এলাকায় রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক শ্রমিক বেজির আক্রমণের শিকার হয়।

বেজির হঠাৎ করে এমন বেশি পরিমাণে কামড়ানোর ঘটনায় অভিভাবকেরা তাদের ছোট সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পৌর এলাকার ধানবাড়ি মহল্লার তুষার শেখ জানান, আমার ছোট ছেলে একদিন স্কুলে যাবার সময় বেজির ধাওয়া খেয়ে চিৎকার করে বাড়িতে চলে এসেছিল। এছাড়াও ছোট ছেলে মেয়েরা এখন বেজির ভয়ে বিকালে বাড়ির বাইরে খেলতে যেতেও ভয় পাচ্ছে।

এদিকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়সাল আহম্মদ যমুনা নিউজকে বলেন, আগেও বেজির কামড়ের রোগী আসতো, তবে গত একমাস ধরে বেজির কামড়ের রোগী বেশি আসছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ জন বেজির কামড়ের রোগী হাসপাতালে আসছেন চিকিৎসা নিতে। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে গ্রাম অঞ্চলের মানুষই বেশি। বেজির কামড়ানো রোগীরা এটাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া দরকার। তা না হলে জলাতঙ্ক থেকে শুরু করে শরীর বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

এদিকে এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাংগ কুমার তালুকদার বলেন, বেজি আসলে একটি বন্যপ্রাণী। হঠাৎ করে বেজির এমন আচরণের কারণ সম্পর্কে জানতে বন বিভাগের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে বেজি কামড়ের পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার বিষয়ে জোর দেন তিনি। বলেন, পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। প্রয়োজনে আরও ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

ইউএইচ/

Exit mobile version