Site icon Jamuna Television

বিশ্বমন্দার মাঝে জর্জিয়ায় বিপরীত চিত্র

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যখন বিশ্বজুড়ে মন্দা পরিস্থিতি, তখন নাটকীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখছে জর্জিয়া। চলতি বছর সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হওয়ার পথে রাশিয়ার ছোট্ট প্রতিবেশী দেশটি।

মূলত বাধ্যতামূলক যুদ্ধে অংশগ্রহণ এড়াতে আশ্রয় নেয়া ১ লাখের বেশি রুশ নাগরিকের কল্যাণে গতি পেয়েছে দেশটির অর্থনীতি। ফলে মন্দার প্রভাবতো পড়েইনি, উল্টো কয়েক বছরের মধ্যে শক্তিশালী অবস্থানে দেশটির মুদ্রা। খবর সিনহুয়ার।

মাত্র ৩৭ লাখ মানুষের দেশ জর্জিয়া। গত আট মাসে দেশটিতে আশ্রয় নেয়া রুশ নাগরিকের সংখ্যা কাগজে কলমে ১ লাখ ১২ হাজার। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পরপরই একসাথে ৪৩ হাজার মানুষ প্রবেশ করে দেশটিতে। পরের দফায় গত সেপ্টেম্বরে রুশ সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের সময় হাজির হয় আরও একটি বড় দল।

উদার অভিবাসন নীতি, ভিসা ছাড়াই ব্যবসার সুযোগ এমন নানাবিধ কারণে জর্জিয়াকে গন্তব্য হিসেবে বেছে নেয় ধনী রুশরা। আর এর প্রভাবে অর্থের ঢেউ ওঠে কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী ছোট দেশটিতে।

পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে ব্যাংক ও অন্যান্য মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ১শ’ কোটি ডলারের বেশি অর্থ প্রবেশ করেছে জর্জিয়ায়।

দেশটির অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ দেভিৎ কেশেলাভা বলেন, ভেবেছিলাম অভিবাসীদের কারণে অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে উল্টোটাই হয়েছে। বহু ধনীরা এসেছে। তারা ব্যবসায়িক পরিকল্পনাও করছে। আশা করা যায়, বছরজুড়েই থাকবে প্রবৃদ্ধি।

চলতি বছরের শুরুতে জর্জিয়ায় আড়াই শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। অথচ বছরের শেষ দিকে এসে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো বলছে, ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির রেকর্ড করতে যাচ্ছে জর্জিয়া।

জর্জিয়ার টিবিসি ব্যাংকের সিইও ভাখটাং বুতশ্রিকিদজে বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে বড় করপোরেট হাউজ। আয় বেড়েছে সর্বত্র। আমার মনে হয়, ২০২৩ সালেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

অবশ্য, নাটকীয় এ প্রবৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে না সবাই। এমনকি বিরূপ প্রভাবও পড়ছে অনেকের ওপর। রুশরা প্রচুর নগদ অর্থ নিয়ে জর্জিয়ার বাজারে প্রবেশ করায় বেড়ে গেছে জিনিসপত্রের দাম। রাজধানী তিবলিসে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত।

ভাখটাং বুতশ্রিকিদজে বলেন, এ বছরের, একমাত্র চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। যা প্রভাব ফেলছে জীবনযাত্রায়। অভিবাসীদের বেশিরভাগ তরুণ এবং প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন ও বেশ দক্ষ। তাই কর্মসংস্থানে স্থানীয়দের পেছনে ফেলতে পারে এমন শঙ্কা আছে।

দেশটিতে অর্থনীতির হঠাৎ এ উল্লম্ফন টেকসই হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকের। যুদ্ধ শেষে রুশরা ফেরত গেলে লাগতে পারে বড়সড় ধাক্কা। তাই, অস্থায়ী বাসিন্দাদের ওপর ভরসা না করে এই সুযোগে রিজার্ভ শক্তিশালী করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

/এমএন

Exit mobile version