Site icon Jamuna Television

বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস করে নতুন ধরনের সন্ত্রাস চালাচ্ছে রুশরা: জেলেনস্কি

ইউরোপীয় কমিশনে ভার্চুয়ালি বক্তব্যরত ভোলদেমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনে আবারও হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। বুধবার (২৩ নভেম্বর) ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে টার্গেট করে অন্তত ৭০টি ক্রুজ মিসাইল ছোড়ে তারা। এতে প্রাণ হারিয়েছে শিশুসহ কমপক্ষে সাত জন। একইদিন, চলমান সামরিক অভিযান নিয়ে রাশিয়াকে কোনঠাসা করে জাতিসংঘ। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করা রাশিয়ার নতুন সন্ত্রাসবাদ। একে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ইউরোপীয় কমিশনে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন জেলেনস্কি।

রুশ মিসাইলের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে ঝাপোরিজিয়ার একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ। প্রাণ হারিয়েছে নবজাতকসহ আরও দু’জন। রাতেই আহতদের উদ্ধার করা হলেও কাটছে না নতুন হামলার আশঙ্কা। ইউক্রেনের দাবি- একদিনে কমপক্ষে ৭০টি মিসাইল-রকেট ছুড়েছে রুশ সেনাবহর। যেগুলোর লক্ষ্য ছিলো ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। এর ফলে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে জাতীয় গ্রিডের অন্তত ৩টি লাইন। এ কারণেই ইউক্রেনের পাশাপাশি অন্ধকারে প্রতিবেশী দেশ- মলদোভার ২৬ লাখ বাসিন্দাও। সোভিয়েত যুগের বিদ্যুৎ লাইনগুলো পরস্পর সংযুক্ত থাকায় ভুগছেন মলদোভিয়ানরাও।

এ প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, আমাদের জ্বালানি স্থাপনাগুলো এই মুহূর্তে রাশিয়ার মূল টার্গেট। কিন্তু, দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এসব হামলায় হাসপাতাল-স্কুল-যানবাহন আর লোকালয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাশিয়ার নতুন সন্ত্রাসবাদের কারণে শুধু ইউক্রেনই বিদ্যুৎহীন নয়; প্রতিবেশী মলদোভাতেও ব্ল্যাকআউট হয়েছে। এটি যুদ্ধের নতুন হাতিয়ার। কারণ, হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রার মধ্যে যখন কোটি কোটি মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন- সেটা স্পষ্টভাবে মানবতা বিরোধী অপরাধ।

এদিকে, জাতিসংঘ অধিবেশনে সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে রাশিয়াকে কোনঠাসা করা হলেও, দেশটির প্রতিনিধির সাফাই- প্রতিপক্ষের ফ্রন্টলাইন দুর্বল করতেই এ রণকৌশল।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেঞ্জিয়া বলেন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ছায়াযুদ্ধ লড়ছে ইউক্রেনে। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কেন্দ্রগুলোয় হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া- সেটা মিথ্যা নয়। কারণ, সেগুলো থেকেই রসদ যোগানো হচ্ছে ফ্রন্টলাইনে। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো- আজ ইউক্রেনীয়রা অন্ধকারে জীবন কাটাচ্ছেন; সেটা নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই। কিন্তু, ২০১৫ সালে যখন ক্রাইমীয়রা এ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে সেসময় কি তাদের নিয়ে কারো মাথাব্যথা ছিলো?

শীত মৌসুমের শুরুতেই ইউক্রেনের জ্বালানি বিভাগকে টার্গেট করেছে রাশিয়া। এ পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে দেশটির ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা। যাতে, গভীরভাবে উদ্বিগ্ন শিশু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থা- সেভ দি চিলড্রেন। তাদের দাবি, ইউক্রেনে গড়ে প্রতিদিন জন্ম নেয় ৯০০ শিশু। কিন্তু, তীব্র ঠাণ্ডা আর বিদ্যুৎহীন অবস্থার কারণে বাড়ছে তাদের প্রাণহানির ঝুঁকি।

/এসএইচ

Exit mobile version