Site icon Jamuna Television

ভালো নেই তালা-চাবি কারিগররা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে পুরাতন ঐতিহ্য। ধনসম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, অফিস-আদালত নিরাপদ রাখার অন্যতম মাধ্যম তালা। তালা নষ্ট হলে কিংবা চাবি হারিয়ে গেলে মানুষকে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। প্রয়োজন পড়ে তালা মেরামত কিংবা নতুন চাবি তৈরির। তালা মেরামত আর নতুন চাবি বানানোর কাজ শিখেই সংসার চালাতেন এক শ্রেণির কারিগর। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নে হারিয়ে যাচ্ছে চাবি তৈরি ও তালা মেরামতের কাজ। তাই ভালো নেই তালা-চাবির কারিগররা।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এক সময় এই পেশার কারিগরদের বেশ কদর ছিল। নতুন চাবি তৈরি, অকেজো তালা ও টর্চলাইট মেরামত করে চলতো নিম্ন আয়ের বহু মানুষের জীবন-জীবিকা। বর্তমানে রসদ খুঁজে না পাওয়ায় কমেছে এ পেশার মানুষের সংখ্যা।

জেলার পৌর শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনের ফুটপাতে বসেন তালাচাবি কারিগর মো. কাঠু মিয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির ডিজিটালসহ বিভিন্ন ধরনের তালা-চাবি বাজারে এসেছে। এগুলো বেশ টেকসই। ফলে পুরাতন তালা-চাবি মেরামত করতে তেমন কেউ আর আসে না। তারা মনে করে, মেরামতের চেয়ে নতুন তালা নেয়া ভালো। তবুও পৈত্রিক পেশা ধরে রেখেছি।

তালা মেরামত করতে আসা মো. বাবলু বলেন, এক সময় বিভিন্ন বাজারে, রাস্তার মোড়ে, ফুটপাতে, স্থায়ী-অস্থায়ী কারিগরদের দেখা যেতো। কিন্তু বর্তমানে তাদের খুব বেশি চোখে পড়ে না। হাতে কাজ না থাকায় অনেকে হয়ত পেশা পরিবর্তন করেছেন।

কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের সামনে তালা মেরামতকারী সারুয়ার মন্ডল। বয়স ৬৫ বছর। প্রায় ৪ দশক ধরে এ পেশার সাথে যুক্ত তিনি।

সারুয়ার মন্ডল বলেন, এক সময় তালা-চাবি ও টর্চলাইট মেরামতের প্রচুর কাজ হতো। আয় রোজগারও ভালো হতো। বর্তমানে কাজ একেবারেই কম। এখন টর্চ লাইটের স্থান মোবাইলে দখল করে নিয়েছে। নানান ধরনের তালা-চাবিও হয়েছে। আয় অনেক কমে গেছে। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে।

উল্লেখ্য, এখন থেকে এক দশক আগেও কামারি তালা আর চার্জার লাইটের প্রচুর ব্যবহার ছিল। ফলে এসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নষ্ট হলে মানুষ ছুটে আসতো কারিগরদের কাছে। হাট-বাজারে এ পেশার মানুষের বেশ কদর ছিল। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এ পেশার মানুষের আয়ের পথ কিছুটা সংকুচিত হয়েছে।

এএআর/

Exit mobile version