Site icon Jamuna Television

কিশোর ফুটবলারদের উদ্ধারের পরই পিতার মৃত্যুসংবাদ পান ড. হ্যারিস

থাইল্যান্ডের গুহায় আটকেপড়া কিশোর ফুটবলারদের উদ্ধারের মতো দুরূহ কাজ সাফল্যের সাথে সম্পাদনে যে ক’জন মানুষের ভীষণ অবদান ছিল তাদের অন্যতম অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক ও অভিযাত্রিক ড. রিচার্ড হ্যারিস। কিশোরদের উদ্ধারের পর গুহা থেকে সবার শেষে বের হয়েছেন তিনি। আনন্দ করারও সুযোগটুকু পাননি তিনি, পিতার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ছুটে যেতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দুর্ধর্ষ মিশন শেষ করে গুহা থেকে বের হওয়ার কিছু পরই জানতে পারেন তার জন্মদাতা আর বেঁচে নেই।

কাকতালীয়ভাবেই এই মিশনে জড়িয়ে পড়েন ডুবুরি হিসেবেও দক্ষ এই চিকিৎসক। গিয়েছিলেন থাইল্যান্ডে বেড়াতে। গিয়ে খবর পেলেন, দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি পাহাড়ের গুহার ভেতরে আটকা পড়েছে ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচ। খোঁজ নিয়ে থাম লুয়াং নামের গুহাটির ভয়াবহতার কথা জানতে পারেন ড. হ্যারিস। এরই মধ্যে তার সাথে যোগযোগ হয় থাই কর্তৃপক্ষেরও অবকাশ বাতিল করে কিশোরদের উদ্ধারে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেন।

ওয়াইল্ড বোয়ার ফুটবল দলের কিশোর সদস্যদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতে চিকিৎসক রিচার্ড হ্যারিস গুহার ভেতরে যান। সেখানে গিয়ে শিশুদের সাথে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর গুহার ভেতরে ৩ দিন ছিলেন ড. হ্যারিস। শিশুদের সফলভাবে বের করে আনার জন্য খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও খেয়াল রাখতে হয় এই চিকিৎসককে।
তারই নির্দেশনায় প্রথমে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছেলেদেরকে বের করে আনা হয়েছিল। তিন দিনব্যাপী এই জটিল ও বিপজ্জনক অভিযান শেষে গুহার ভেতর থেকে যেসব উদ্ধারকারী সবার শেষে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি তাদের একজন।

কিন্তু কিশোরদের নিরাপদে বের করে আনার আনন্দে যোগ দিতে পারেননি ড. হ্যারিস। উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই এই চিকিৎসক খবর পান তার বাবা মারা গেছেন। ছুটে যান পরিবারের কাছে। এরপর আর গণমাধ্যমের সাথেও কোনো কথা বলেননি তিনি। তবে, কথা বলেছেন ড. হ্যারিসের বস ড. অ্যান্ড্রু পিয়ার্স। জানান, হ্যারিসের জন্য এটা শোকের সময়। পিতার মৃত্যু পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে সে পরিবারের সাথে মূল্যবান কিছু সময় পার করবে। এই শোক কাটিয়ে সে নিশ্চয় এ ব্যাপারে কথা বলবে।

অবশ্য, পিতার মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই ‘ফেস টাইম’ অ্যাপের মাধ্যমে অস্ট্রলিয়ান প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সাথে কথা বলেন ড. হ্যারিস। অভিনন্দনের জবাবে হ্যারিস জানান, আসল নায়ক সেই কিশোর ফুটবলাররা এবং থাই নেভি সিলের ডুবুরিরা। তিনি শুধু তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন।

এতটুকুতেই একজন বিনয়ী লোকের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে। ব্যবহার দিয়ে থাই নেভি সিলের সদস্যদেরও মন জয় করে নিয়েছেন ড. হ্যারিস। তার পিতার মৃত্যুতে নেভি সিলের পক্ষ থেকে গভীর শোক জ্ঞাপন করা হয়েছে। জানানো হয়েছে ড. হ্যারিসের প্রতি ভালোবাসা।

যমুনা অনলাইন: টিএফ

Exit mobile version