Site icon Jamuna Television

মেসির হাতেই বিশ্বকাপ ট্রফির পূর্ণতা

ছবি: সংগৃহীত

তিনি এমন একজন, যার হাতেই মানায় সোনালী ট্রফিটা। তার হাতেই অবশেষে ধরা দিলো অধরা বিশ্বকাপ শিরোপা। যে ট্রফিও হয়তো তার হাতে উঠতে পেরে রাজ্যের শান্তি পেয়েছে। এই ট্রফিই হয়তো অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো এই ম্যাজিকাল মানুষটার হাতে উঠার।

আমি পাইলাম, ইহাকে পাইলাম, অবশেষে পাইলাম। মনে মনে হয়তো এমনটাই বলছে সোনালী রংয়ের ট্রফিটা। তার কাছে যাওয়ার জন্যই যে ব্যাকুল হয়ে ছিলাম, ধরা দিতে চেয়েছিলাম, কাছে গিয়েও তার সাথে ফেরা হয়নি ঘরে; অপেক্ষার পালা হয়েছে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। তবুও হাল ছাড়িনি, অপেক্ষার প্রহর গুনেছি, অবশেষে সেই ফুটবল জাদুকরের হাতেই শোভা পেলাম। যেন এমনটাই বলছে সোনালী ট্রফি!

২০০৬ থেকে শুরু, ২০১০ হয়ে ২০১৪, পেরিয়েছে ২০১৮ বিশ্বকাপও। চোখের নোনা জল বারবার হতাশার রেশ তুলে গেছে। তার বিরস নয়নে চেয়ে থাকা বলে যায় একের পর এক বিরহের কবিতা। কানে বাজে বাশির করুণ সুর।

আর্জেন্টিনা ফাইনালে নামার আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সমর্থকটাও আনমনে বলে উঠেছে, সোনালী ট্রফিটা তার হাতেই উঠুক। তার হাতেই শোভা পায় এই অর্জন। আলবিসেলেস্তাদের ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান তার হাত ধরেই, এর থেকে মধুর দৃশ্য আর কী হতে পারে ফুটবলের জন্য!

বার কয়েক একাই টেনেছেন। গ্লানি বয়েছেন নিজের কাধেই। হতাশায় আকাশী-সাদা জার্সিটাও তুলে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আবারও ফিরেছেন সবুজ গালিচায়; দেশের টানে, ফুটবলের ভালোবাসার টানে। যে ফুটবলকে তিনি দিয়েছেন পুরোটা উজাড় করে, সেই ম্যাজিকাল মানুষটাকে এবার ফুটবল দিলো দু’হাত ভরে।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে নামার দিনই গড়েছেন রেকর্ড। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে বিশ্বমঞ্চে খেলেছেন সর্বোচ্চ ২৬ ম্যাচ। শুধু তাই নয়। প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এক বিশ্বকাপের সবক’টি নকআউট ম্যাচে গোল করেছেন। যার মধ্যে দুটি করেছেন ফাইনালেই। আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে যা ছিলো অন্যতম নিরামক।

বিশ্বকাপে ছুঁয়ে ফেলেছেন পেলেকে, সমান ১২ গোল করেছেন। করিয়েছেন সমান আট গোলও। নিজের শেষ বিশ্বকাপটাকে যে বেছে নিয়েছিলেন সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে। সেই দৌড়ে দ্বিতীয়বারের মতো তার হাতে উঠেছে বিশ্বকাপের সেরার তকমা। গোল্ডেন বলও ছিল তারই অপেক্ষায়। ক্যারিয়ারে কত কী অর্জন তার! শোকেজে ভরা ট্রফি। এমন হেন অর্জন নেই যেনো তার ডেরায় নেই। কিন্তু আক্ষেপ অপেক্ষা সবকিছুই যেন মিলেছিল এক বিন্দুতে। যে বিন্দু মহিরুহের মতো ছড়িয়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে।

সেই বিন্দু জমতে জমতে এক মহাসমুদ্রে রুপ নিয়েছে। যেই মহাসমুদ্রের একমাত্র নাবিক তিনি, যার হাতেই মানায় এই সোনালী ট্রফি, অবশেষে তার হাতেই উঠলো অধরা শিরোপাটা। এখন সপ্তামাকাশে উঠে গেছেন রোজারিওর ছোট্ট সেই বালক। বিশ্বকাপ ট্রফি খুঁজে পেলো তার পূর্ণতা।

আরও পড়ুন: ৩৬ বছর পর স্বপ্নের বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার

/এম ই

Exit mobile version