Site icon Jamuna Television

রফতানি আয় বাড়ছে; উদ্যোক্তারা বলছেন, এ ধারা ধরে রাখা কঠিন

রিমন রহমান:

চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে রফতানি আয়ে তৈরি হয়েছে চাঙ্গাভাব। একক মাস হিসেবে নভেম্বরে স্পর্শ করেছে ৫ বিলিয়ন ডলার পণ্য রফতানির মাইলফলক। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন অবস্থায় রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কীভাবে হয়!

উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে কমেছে পণ্যের চাহিদা। ছাঁটাই হচ্ছে শ্রমিক। এই সময়ে রফতানি আয় বাড়লেও এই ধারা টেকসই হবে না।

তৈরি পোশাকে ভর করে জুলাই থেকে নভেম্বর এই পাঁচ মাসে হয়েছে তুলনামূলক বেশি পণ্য রফতানি। যার পরিমাণ ২ হাজার ১৯৫ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যা ২ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু উৎপাদকরা দিচ্ছেন ভিন্ন তথ্য।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কোনো কোনো ফ্যাক্টরিতে অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। কারণ, তার কাজ নেই। আমার জানামতে, অধিকাংশ ফ্যাক্টরিতে এখন ওভারটাইম নেই। এমনিতেই শ্রমিকদের আয় কমে গেছে।

একক মাস হিসেবে গেলো নভেম্বরে রেকর্ড পণ্য রফতানি হয়। যার আর্থিক মূল্য ৫০৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার। আগের বছরের একই মাসের চেয়ে যা ২৬ দশমিক ১ ভাগ বেশি। তবে, রফতানিকারকদের দাবি, ক্রেতারা পণ্য নেবার ক্ষেত্রে নানান টালবাহানা করছে। তাই রফতানির এই ধারা টেকসই হবে না।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অনেক বায়ার তার উৎপাদিত পণ্যের শিপমেন্ট নিচ্ছে না। না নিয়ে তারা স্টক করে রেখেছে। স্টক করে বিভিন্ন ছাড়ে অবৈধভাবে পণ্য নেয়ার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলা, সুতার দাম কমে গিয়েছে। তাই বায়াররা এখন চিন্তা করতেছে, অর্ডারটা স্টক করে দিই। নতুন করে অর্ডার দিই। পণ্যগুলো স্টক হয়ে গেলে বেশি দামে তার আর পণ্য নিতে হবে না। এটা কিন্তু বৈধ নয়।

নানা কারণে চীন থেকে ক্রেতারা সরে আসছে; এতে সম্ভাবনা হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। বলা হচ্ছে বছর শেষে পূরণ হতে পারে রফতানি আয়ের লক্ষ্য।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বৈশ্বিক বাজারে কিছুটা সংকোচন থাকলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রফতানিতে ইতিবাচকভাবে বছর শেষ হবে বলে মনে হয়। তৈরি পোষাকের বড় বাজার চীন থেকে অর্ডার অন্যখানে চলে যাচ্ছে। শুধু অর্ডার না, বিনিয়োগও সরে যাচ্ছে। জিরো কোভিড নীতির কারণে চীনে আবারও লকডাউন শুরু হচ্ছে। তাতে চীনের মতো দেশে বায়ারদের নতুন করে অর্ডার দেয়াটাও দুশ্চিন্তার হয়ে গেছে। এই অর্ডারগুলো বাংলাদেশে আসবে।

তবে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মন্দা শুরু হলে রফতানি আয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। চলতি অর্থবছরে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।

/এমএন

Exit mobile version