Site icon Jamuna Television

আ. লীগের কমিটি: ‘নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় পুরনোদের ওপরই আস্থা’

আলমগীর স্বপন:

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এবার বড় কোনো চমক আসেনি। দলীয় সভানেত্রীর আস্থাভাজন হওয়াও কমিটি গঠনে ফ্যাক্টর ছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ কারণে পুরোনারাই থেকে গেছেন কমিটিতে। তাতে তরুণ ও অনেক ত্যাগী নেতা হতাশ হবেন বলে ধারণা তাদের।

নতুন কমিটিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সভানেত্রী থাকবেন, এটা অনুমেয় হলেও সাধারণ সম্পাদক পদ ঘিরে ছিল জল্পনা-কল্পনা। এই পদে তৃতীয়বারের মতো হ্যাট্টিক করেছেন ওবায়দুল কাদের। এমনকি কাউন্সিলে তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হননি আলোচিতরা। সব মিলিয়ে কয়েকজন ছাড়া পুরোনোরাই থেকে গেছেন ঘোষিত কমিটিতে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগে অনেকটা নিয়মরক্ষার কাউন্সিল এটি। এক বছর পর ভোট, নেতৃত্বে বড় পরিবর্তনের ঝুঁকি নিতে চায়নি দলটি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, সাধারণ সম্পাদককে তো সর্বোচ্চ নেতৃত্বের আস্থাভাজন হতে হয়। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমার মনে হয়, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এবারের কাউন্সিলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। যে কারণে নতুন কোনো এক্সপেরিমেন্টে যায়নি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কোনো পরিবর্তন নেই, চমক নেই। যারা ছিলেন, তারাই মূলত আছেন। তারা মনে করে, এটিই তাদের উইনিং টিম।

সুজন সম্পাদক মনে করেন, পরিবর্তন কম হওয়ায় পদ না পেয়ে ত্যাগী ও তরুণ নেতৃত্বে হতাশা আসতে পারে। যদিও ৮১ সদস্যের কমিটিতে এখনও প্রেসিডিয়াম, সম্পাদকসহ ৩৩টি পদ খালি রয়েছে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ওবায়দুল কাদেরই বলেছিলেন, অন্তত ১০ জন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আকাঙ্খী ছিলেন। আওয়ামী লীগে অনেক উদীয়মান নেতা আছেন। অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা আরও বড় দায়িত্ব পালন করতে পারতো। তারা হতাশ হবেন।

অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, তরুণ প্রজন্ম তো আছেই, আওয়ামী লীগ এত বিশাল একটা দল, বিশাল পরিবার, সবাইকে তো আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনতে পারবে না।

বিশ্লেষকরা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনা ও দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তিদের না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এমন অবস্থায় দল আর সরকারের মধ্যে পার্থক্য থাকে না। দুটোই একাকার হয়ে যায়।

ড. হারুন অর রশিদ বলেন, সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রিত্ব ছাড়া থাকতে পারতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সামনে এই প্রশ্নটাই তার বিপক্ষ যারা ছিলেন, তারা তুলেছেন; উনি সাধারণ সম্পাদক পদেও আছেন, আতাউর রহমানের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীও আছেন। দুটো তো থাকতে পারবেন না। তখন বঙ্গবন্ধুর সামনে চয়েজ হলো, কোনটা রাখবেন, কোনটা ছাড়বেন। তখন উনি মন্ত্রী থাকলেন না, দলের সাধারণ সম্পাদক থাকলেন।

নতুন কমিটির জন্য আগামী নির্বাচন মোকাবেলা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন এই দুই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

/এমএন

Exit mobile version