Site icon Jamuna Television

মহাতারকা হয়েও পেলে ভুলতে পারেননি তার নাপিত বন্ধুকে

ছবি: সংগৃহীত

পেলের সঙ্গে পরিচয়টা পঞ্চাশের দশকে। ক্লাবের বাইরের ছোট্ট সেলুনে চুল দাড়ি কাটাতে গিয়ে সাক্ষাৎ। একজন সাধারণ নাপিত আর একজন কিংবদন্তি ফুটবলার হয়ে ওঠেন খুব কাছের বন্ধু। মহাতারকা হয়ে ওঠার পরও ভোলেননি সাধারণ এক নাপিতকে। ৮২ বছর বয়সে বন্ধুর এই চলে যাওয়াটা তাই মেনে নিতে পারছেন না পেলের চুল দাড়ি কাটানো নাপিত বন্ধু জোয়াও আরাওহো দিদি। বলেছেন- ঈশ্বর পেলের খেয়াল রাখবেন।

ফুটবলের রাজা পেলের বয়স তখন মাত্র ১৫। তখনই ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস চুক্তি করে পেলের সাথে। ১৯৫৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর করিন্থিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন ফুটবল সম্রাট। সেখান থেকেই শুরু হয় সান্তোসের সঙ্গে তার ১৮ বছরের পথচলা।

সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরো আর তার বাইরের সাও পাওলো শহরটা সবচেয়ে ভালো জানে দো-নাসিমেন্তোর পেলে হয়ে ওঠার গল্পটা। ক্লাবের ঠিক বাইরের এক সেলুনে চুল কাটাতে গিয়ে পেলের সাথে প্রথম দেখা জোয়াও আরাওহো দিদির। পেশায় একজন নাপিত।

ছবি: সংগৃহীত

পেলের নাপিত বন্ধু জোয়াও আরাওহো দিদি বলেন, পেলে এখানে মাসে অন্তত দুই তিন বার চুল দাড়ি ছাটাতে আসতো। পঞ্চাশের দশকেই তার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। সেই থেকে বাঁকি জীবন সে আমার সেলুনেই এসেছে। তাঁর জন্য আমি বিশেষ একটা হেয়ারকাট তৈরি করেছিলাম যেটা তাঁর ভীষণ পছন্দের ছিল।

সেলুনের দরজায় পেলের হেয়ারড্রেসার দিদি লেখা ব্যানার লাগিয়েছেন। দুপাশে সান্তোস ফুটবল ক্লাবের লগো। সেলুনের ভেতরে অসংখ্য স্মৃতি বিজড়িত ফটোগ্রাফ। তারুণ্য থেকে বৃদ্ধ। সময়টা ফ্রেম বন্দি করে রেখেছেন দিদি। আছে পেলের সান্তোসের জার্সিও।

ছবি: সংগৃহীত

শুধু একজন নাপিত নন। দিদি হয়ে উঠেছিলেন পেলের খুব কাছের বন্ধু। বন্ধুর জীবনের শেষ সময়গুলো তাই এখনো ভাবায় আরাওহোকে। কেমন ছিলো তার দেখা পেলের শেষদিনগুলো? স্মৃতিচারণ করলেন দিদি।

জোয়াও আরাওহো দিদি আরও বলেন, অসুস্থ হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সে এখানে আসা বন্ধ করে দেয়। রোগটা বড্ড বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সে এখানে না এলেও আমি তাঁর বাড়িতে যেতাম চুল দাড়ি কাটিয়ে দিতে। পরবর্তী সময়ের জন্য অপেক্ষা করতাম। সে কখনো আমাকে ভোলেনি। গতবছর আমি তাঁকে শেষবার দেখেছি। অসুস্থতার কারণে শেষ সময়ে সে শুয়েই কাটাতো। ঈশ্বর তাঁর খেয়াল রাখবেন।

ছবি: সংগৃহীত

৮২ বছর বয়সে বন্ধু পেলের চলে যাওয়া বিশ্বাস করতে পারেননা জোয়াও দিদি। যখন পরিচয় তখন আর দশটা সাধারণ ফুটবলারের মতই ছিলেন পেলে। মহাতারকা হয়ে ওঠার পরও ভোলেননি সাধারণ এক নাপিতকে। এটাই বুঝি পেলেকে করে তুলেছে অসাধারণ।

শুণ্য থেকে নক্ষত্র হতে দেখা। দেখলেন সেই নক্ষত্রের খসে পড়াও। জোয়াও আরাওহো দিদির কাছে থেকে যাওয়া পেলের সেই স্মৃতিগুলো এখন আরো বেশি দামি।

/আরআইএম

Exit mobile version