Site icon Jamuna Television

লিট ফেস্ট: ‘সামাজিকভাবে বাড়াতে হবে সাহিত্যের পাঠক’

১০ম ঢাকা লিট ফেস্ট’র দ্বিতীয় দিন ছিল আজ। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ছুটির দিনে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ছিল সব বয়সী মানুষে মুখরিত। পাঠক-দর্শনার্থীরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের সাহিত্যের সঙ্গে ইংরেজির মাধ্যমে বাংলার মানুষের পরিচয় ঘটছে এই ফেস্টের মাধ্যমে। লেখকরা বলছেন, সাহিত্যের পাঠক বাড়াতে হবে সামাজিকভাবেই।

কুয়াশাচ্ছন্ন দিনের শুরুতে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে চলছিল ‘আগামীর আখ্যান’ শীর্ষক সেশন। দেশের লেখক, সাহিত্যিকের এই অংশগ্রহণে আসে ভাষার ব্যবহার, লেখার ধরন- ভবিষ্যৎ থেকে শুরু করে সাহিত্য চর্চার নানান অনুষঙ্গ। অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কাছে সঞ্চালক, লেখক স্বকৃত নোমানের প্রশ্ন ছিল, পাঠকের সংখ্যা কমছে, রাষ্ট্রের কোনো কর্তব্য আছে কিনা। লেখক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্কুলকে যদি ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ হিসেবে ঘোষণা না করা হয়, সেখানে চিত্ত শুদ্ধি ও চিত্ত নির্মাণের না দিয়ে দিই; তাহলে পাঠকও হবে না, লেখকও হবে না। আমরা রাষ্ট্রের উপর দায়িত্ব তুলে দিলে রাষ্ট্র কর্তৃত্ববাদী হয়ে যাবে। মানুষের উচিত রাষ্ট্রকে বাধ্য করা, যেন শিক্ষা উন্নত করা হয়।

আরেক লেখক ও সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন, সাহিত্য পাতার পরিসর কেন কমছে কাগজে? এর জবাবে লেখক ও সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, সাপ্তাহিক কাগজে যা যা থাকতো, তার সবই এখন দৈনিক পত্রিকায় ঢুকে গেছে। দৈনিক পত্রিকায় বিনোদন, খেলার পাতা হয়েছে। এসবের চাপে সাহিত্য একটু সংকুচিত হয়ে গেছে।

ঢাকা লিট ফেস্ট’র দ্বিতীয় দিনেও মূল কর্মযজ্ঞ ছিল এমন সব সেশন ঘিরে। কয়েকটি ভাগে দিনভরই চলে তা। চারদিনের ফেস্টে এমন ১৭৫টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দেশি বিদেশি লেখকসহ থাকছেন ক্রীড়া, বিজ্ঞানসহ নানান অঙ্গনের প্রায় ৫ শতাধিক বক্তা।

একাডেমি প্রাঙ্গনজুড়ে বইয়ের স্টল তো আছেই। পাঠক, দর্শনার্থীদের জন্য নানান ধরনের সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ করে দিয়েছে ঢাকা লিট ফেস্টের এই দশম আসর। বিশিষ্টজনরা বলছেন, এ আয়োজন সাহিত্যের যোগসূত্র হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু বাংলা সাহিত্যের আন্তর্জাতিকীকরণে প্রয়োজন ভালো অনুবাদের। যা হচ্ছে না। লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের ভাষায় রবীন্দ্রনাথই শুধু নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আমার ধারণা, সাহিত্যে নোবেল পাওয়ার মতো সাহিত্যিক বাংলাদেশে আরও আছে। তারা পাননি, কারণ বিদেশে তাদের সেরকম পরিচিতি নেই। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের দেশে পশ্চিমা ‘এক্সপোজার’ ছাড়া কাউকে গুরুত্ব দেয়া হয় না।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, আমাদের অনেক চমৎকার সাহিত্য আছে। কিন্তু যথোপযুক্ত অনুবাদ নেই।

লিট ফেস্টের মতো আয়োজন আরও বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতনরা। সেই সঙ্গে, ফেস্টের প্রতি আয়োজনেই বাড়বে পাঠকের ভিড়-এমন প্রত্যাশা সকলের। ঢাকা লিট ফেস্ট চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন উন্মুক্ত থাকবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা অবধি।

/এম ই

Exit mobile version