Site icon Jamuna Television

বাড়ি ফিরলো গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া সেই ১২ কিশোর

অবশেষে বাড়ি ফিরলো থাইল্যান্ডে দুর্গম গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ। স্থানীয় সময় বিকেলে হাসপাতাল থেকে বিদায় দেয়া হয় তাদের। এসময়, সংবাদ সম্মেলনে গুহার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করে তারা। দুঃখ প্রকাশ করে গুহায় ঢুকে ভোগান্তি তৈরির জন্য।

গুহায় আটকা পড়ার পর বিশ্ববাসী তাদের চিনেছে ফুটবলার হিসেবে। সে কারণেই হয়তো প্রথমবার জনসমক্ষে আসার মুহুর্তে থাইল্যান্ডের ১২ কিশোরের সঙ্গী ফুটবল। খেলা আর দুষ্টুমিতে মেতে থাকা কিশোরদের দেখে বোঝার উপায় নেই, কয়দিন আগেও কতো ভয়াবহ ঝড় গেছে তাদের ওপর।

রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার অভিযানের, ১০ দিন পর, বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি হয়েছে ১২ কিশোর ও তাদের কোচের। বাড়ি ফেরার আগে, সংবাদ সম্মেলনে, তারা স্মৃতিচারণ করে অন্ধকার গুহায় কাটানো ১৭ দিনের।

একজন কিশোর বলেন, “সাথে খাবার ছিল না। জানতাম না কবে বের হতে পারবো। কিন্তু বেঁচে থাকার চেষ্টা তো করতেই হতো। তাই ক্ষুধার সাথে মানিয়ে নিয়েছিলাম। পছন্দের খাবার ফ্রায়েড রাইসের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। পানি খেয়ে পেট ভরে রাখতাম, যেন ক্ষুধা না লাগে।”

দলের সবারই চেষ্টা ছিল অপরিচিত, ভীতিকর পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার। ২৩ জুন থেকে ৮ জুলাই উদ্ধার হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতিটি মুহুর্তের কথা মনে আছে তাদের। গুহা থেকে বের হওয়ার চেয়েও, ১০ দিনের মাথায় প্রথম সন্ধান পাওয়ার দিনটিতেই, স্বস্তি ছিল বেশি।

আটকে পড়া এক কিশোর বলেন, “বের হওয়ার রাস্তা খুজতে গুহার ভেতর খোড়াখুড়ি করছিলাম আমরা। এমন সময়েই হঠাৎ হাজির দুই ডুবুরি। শুরুতে তো বিশ্বাসই করতে পারিনি। বেশি অবাক হয়েছি যে, তিনি থাইল্যান্ডের কেউ ছিলেন না। একজনমাত্র তার ইংরেজি বুঝেছে, পরে সে-ই সবাইকে অনুবাদ করে শুনিয়েছে।”

কখনো ডুবসাঁতার, কখনো সরু, খাড়া রাস্তায় গড়িয়ে চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে উদ্ধারকর্মীদের। ১৩ জনকে উদ্ধার করতে হয়েছে তিন দিনে। কিন্তু আগে বের হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা ছিল না কোনো।

কোচ বলেন, “কেউ বের হওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করেনি। সবার মধ্যে এতো সুসম্পর্ক যে, তারা কেউ কেউ স্বেচ্ছায় পরে আসতে চেয়েছে। কেবল বয়সে সবার ছোট মার্ককে শেষের দিন আনতে হয়েছে, কারণ শুরুতে তার উপযোগী এতো ছোট মাস্ক পাওয়া যাচ্ছিলো না।”

জটিল উদ্ধারকাজে প্রাণ যায় এক ডুবুরির; বাড়ি ফেরার খুশির দিনটিতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভোলেনি কিশোররা। গুহায় ঢুকে ভোগান্তি তৈরির জন্য স্বজনদের কাছে দুঃখ প্রকাশও করেছে তারা।

অবশ্য অতীতের ভয়ংকর স্মৃতি ভুলে সামনে এগোতে চায় এ কিশোররা। তাদের কারও স্বপ্ন, বড় ফুটবলার হওয়ার। কেউ চায়, নেভি সিলের মতো উদ্ধারকর্মী হয়ে মানুষের সেবা করতে।

Exit mobile version