Site icon Jamuna Television

কবে নিরাপদ হবে নেপালের আকাশ?

নেপালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তে সব আরোহীর মৃত্যুর পর আবারও সামনে এলো একই প্রশ্ন, কবে নিরাপদ হবে নেপালের আকাশ! কেনো বারবারই হিমালয়কন্যায় ভয়ংকর সব দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিশ্বের সবচেয়ে ভীতিকর রুটে নেপালের পাইলটরা বিমান চালালেও তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণও দেয়া হয় না। তাছাড়া দেশটির পরিবহন খাতে রয়েছে বিনিয়োগের অভাব, দুর্বল নজরদারিও।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির। এর ১৫ দিন যেতে না যেতেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দেখলো বিশ্ব। এর সাথে, ট্র্যাফিক কন্ট্রোল বা এয়ারপোর্টের কোনো যোগসূত্র পাওয়া না গেলেও, রানওয়ের কাছেই বিধ্স্ত হয়েছে ফ্লাইট- নাইন সিক্স ওয়ান।

বিমান দুর্ঘটনা নেপালের জন্য বিরল ঘটনা নয়। সুউচ্চ পর্বতমালার প্রায় সবগুলোই দেশটিতে অবস্থিত। দুর্গম পাহাড়ি রানওয়ে, হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের মতো সংকটের মধ্যেই পাইলটদের চালাতে হয় বিমান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

এ নিয়ে ব্রিটেনের বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ সিন ম্যাফিট বলেন, ফ্রান্সের বিমান ‘এটিআর-৭২’ বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। তবে সেটা কোন এলাকায় উড়ছে এবং কারা সেটি চালনা করছেন তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। নেপালেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলো। ভয়ংকর সব গিরিখাদের মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে ওড়াতে হয় বিমান, যা খুবই ভীতিকর।

একই কথা বললেন অস্ট্রেলিয়ার বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ জিওফ থমাস। তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২১টি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে নেপালে। কারণ, পাইলটদের হিমালয়ের মধ্যে দিয়ে ওড়াতে হয় বিমান। দেশটিতে লুকলা এয়ারপোর্টের মতো জায়গায় বিমান অবতরণ করাতে হয়। যেখানে, রানওয়ে একদম পর্বতের প্রান্তে। সংক্ষিপ্ত পথ পাড়ি দিয়ে বিমানকে তুলে ফেলতে হয় আকাশে।

নেপালে নতুন বিমান ক্রয় বা সংস্কারে রয়েছে বিনিয়োগের অভাব। অতীতে দুর্বল নজরদারিকেও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এমনকি নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় নিজ আকাশসীমায় নেপালিজ এয়ারলাইন্সকে নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) পোখারায় বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির ৭২ আরোহীকেই মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এই ৭২ জনের মধ্যে ৬৮ জন যাত্রী ছিলেন এবং ৪ জন ক্রু ছিলেন। এর মধ্যে ৫৩ জন নেপালি, ৫ জন ভারতীয়, ৪ জন রাশিয়ান ও ২ জন কোরিয়ান নাগরিক ছিলেন। এদিকে এ ঘটনাকে মর্মান্তিক বলে টুইটারে পোস্ট দিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি।

এসজেড/

Exit mobile version