Site icon Jamuna Television

নির্বাচনী বছরে থমকে যায় উন্নয়ন; প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা

নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। অতীত অভিজ্ঞতা বলে, নির্বাচনী বছরে থমকে যায় বিনিয়োগ। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও আসে শ্লথগতি। তার ওপর করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এবার এমনিতেই চাপে রয়েছে অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নানামুখী চাপ অর্থনীতিতে স্পষ্ট; প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। এই সময়ে টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জিং।

এক বছরে যে পরিমাণ পণ্যসামগ্রী উৎপাদন এবং সেবার যোগান দেয়া হয় তার বাজারমূল্যই মোট দেশজ উৎপাদন বা প্রবৃদ্ধি। করোনার দুই বছর বাদ দিলে উৎপাদনের দিক থেকে অন্য এক স্তরে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। ছয় অংকের বৃত্ত ভেঙে দেশের গড় প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৭ ভাগ। কিন্তু করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছে সেই গতি। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্বাচনের উত্তাপ।

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, নির্বাচনের বছরে কিছুটা শঙ্কার সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবেন বিনিয়োগকারীরা। বর্তমান সরকার যে পলিসিগুলো নিয়েছে, পরবর্তী সরকার সেগুলো রাখবে কিনা, এসব নিয়ে শঙ্কা থেকে যায়। জ্বালানি নিরাপত্তার কারণে গ্যাসের সংকটে অনেক ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারছে না।

গেল চারটি নির্বাচনের বছরের প্রবৃদ্ধির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের বছরের চেয়ে ভোটের বছর উৎপাদন কমেছে। ২০০৯ সনের নির্বাচনের বছরে সবচেয়ে বেশি কমেছিল প্রবৃদ্ধি। ২০১৮ সনের নির্বাচনের বছরে কিছুটা বাড়লেও তার পরের বছরেই অর্ধেকে নামে প্রবৃদ্ধির হার। এবারের নির্বাচনের বছরে কী হবে, তাই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ২০২৩ এর প্রথম অর্ধে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা খুব বড় কোনো ভূমিকা রাখবে বলে মনে হয় না। তবে দ্বিতীয় অর্ধে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবে সেটি বেশি নির্ভর করবে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো সেই সময়কালে কতটা ঘনীভূত হবে, তার ওপর।

জিডিপির যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জনে দরকার পর্যাপ্ত ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ। কিন্তু নির্বাচনের বছরে সেই গতি সঞ্চার করা কঠিন হবে। খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, তেলের বাজারে বৈশ্বিক সংকট, ডলারের উচ্চমূল্য, আমাদের রিজার্ভের স্বল্পতা- এই বিষয়গুলো ব্যবসা বাণিজ্যকে ভোগাচ্ছে, এবং ভোগাবে। এর কারণে জিডিপির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির উপর যে নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে পড়েছে, বছরের আগামী ছয় মাস তা থাকবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তবে, যে কোনো মূল্যে অর্থনীতির গতি ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে রেললাইন পর্যন্ত উপড়ে ফেলা হয়েছিল। নির্বাচনী কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল যেসব স্কুলঘরে, সেগুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। আমি আশা করবো, এ বছর যেন বাংলাদেশে এমনটা আর না হয়। আমি ঘোরাফেরা করবো রিকশা, মটরসাইকেল নিয়ে; মাইক ভাড়া করবো। পোস্টার ছাপাবো, মানুষ জমা হবে। চা-বিস্কিট খাওয়াবো। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হবে।

/এম ই

Exit mobile version