Site icon Jamuna Television

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ২ বছর

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর পার হলো ২ বছর। ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে চলা করোনা সঙ্কটের মধ্যেই অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। আন্তর্জাতিক মহলের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলে নিপীড়ন-নির্যাতন। পাল্টা জবাবে শুরু হয় বেসামরিকদের বিক্ষোভ প্রতিবাদ আর গণতন্ত্রকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতিরোধ আন্দোলন। ফলে গেল ২ বছরে মিয়ানমার পরিণত হয়েছে গৃহযুদ্ধের দেশে।

রাত হলেই বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলে নিরাপত্তা বাহিনীর। গণতন্ত্রপন্হী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের খোঁজ পেলেই করা হয় গ্রেফতার, নয়তো গুম। গেল ২ বছর ধরে এমন দৃশ্য যেনো নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে মিয়ানমারে।

২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ক্ষমতা দখল করেছিল দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতাকে। দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে জেলসাজা। তবে হাল ছাড়েনি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ। সামরিক শাসনের প্রতিবাদে শুরু হয় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। কারফিউ-জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করেই চলে আন্দোলন। পাল্টা ধরপাকড় শুরু করে সামরিক বাহিনীও। চলতে থাকে গণগ্রেফতার। আটক করা হয় সু চির দল এনএলডিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শত শত নেতাকর্মীকে। এক পর্যায়ে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোও। হামলা হয় সামরিক বাহিনীর ওপরও। পাল্টাপাল্টি সহিংসতায় পুরো মিয়ানমারে ছড়ায় গৃহযুদ্ধ।

মিয়ানমারের এক বিদ্রোহী যোদ্ধা আয়ে চ্যান বলেন, আমি আগে একটি কারখানার শ্রমিক ছিলাম। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর আমি বিদ্রোহী গ্রুপে যোগ দেই। সেনা হামলায় আমার এক পা উড়ে গেছে। আমার মতো বহু তরুণ যোগ দিয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপগুলোতে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।

গেল ২ বছরে মিয়ানমারে সহিংসতায় প্রাণ গেছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের। বেশিরভাগ প্রাণহানিই হয়েছে সামরিক জান্তার নিপীড়নে। আটক করা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে। আর গৃহযুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখ মানুষ।

মিয়ানমারের শরণার্থী হ্যান লে জানান, আমরা যারা সামরিক জান্তার বিরোধিতা করেছিলাম তাদের জন্য মিয়ানমারে থাকা অসম্ভব। অনেকেই বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। বিরোধিতাকারীদের না পেয়ে অনেকের পরিবারের সদস্যদের আটক করা হয়। সব মিলিয়ে খুব কঠিন হয়ে উঠেছে মিয়ানমার।

এদিকে, সামরিক জান্তাকে লাগাম দিতে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির সেনাবাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিচার বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর আরোপ করা হয় কড়াকড়ি।

ইউএইচ/

Exit mobile version