Site icon Jamuna Television

১৫ দিনেও পেলেন না মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার, ক্ষোভে বাবার ‘আত্মহত্যা’

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে পঞ্চগড় সদরে ভুক্তভোগী এক বাবার আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমটি এলাকায় চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম গজেন চন্দ্র বর্মণ (৫০)। তিনি একই এলাকার মৃত নেভুরাম বর্মণের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গজেন বর্মণের কলেজপড়ুয়া মেয়েকে তুলে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন ওই এলাকার পলাশ চন্দ্র বর্মণ (৩০) নামে এক যুবক। এ ঘটনার বিচার দাবি করলে বিষয়টি বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিয়ে সুরাহার আশ্বাস দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মণ। কিন্তু ঘটনার ১৫ দিন পার হলেও কোনো সুরাহা পাননি ভুক্তভোগীর পরিবার। একাধিকবার চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েও কোনো বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা করেন ভুক্তভোগী তরুণীর পিতা গজেন চন্দ্র বর্মণ (৫০)।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা, বুধবার রাতে বাড়ির অদূরে একটি আবাদি জমির পাশে থাকা পাখুঁরী গাছে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

এদিকে, আত্মহত্যার জন্য মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মণকে দায়ী করছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতার কারণে মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পাবার আশঙ্কায় আত্মহত্যা করেছেন গজেন বর্মণ।

গজেন বর্মণের ছেলে সুজন বর্মণ জানান, গত ১৭ জানুয়ারি রাতে তার কলেজ পড়ুয়া ছোট বোনকে প্রতিবেশী শ্যামল চন্দ্র বর্মণের ছেলে পলাশ চন্দ্র বর্মণ অসৎ উদ্দেশে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। পরিবারের লোকজন বিষয়টি দেখে ফেলায় পলাশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সে পালিয়ে যায়। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন তার বোন। পরে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে তাদের সম্মানহানি হয়। পরে পলাশের বিচার দাবি করলে চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মণ বিষয়টি সুরাহা করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। কিন্তু এক সপ্তাহ অতিবাহিত হতে চললেও কোনো উদ্যোগ নেননি তিনি। পরে ২৪ জানুয়ারি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদে বসার দিন ধার্য করা হয়। সেখানেও বসা হয়নি। ফলে ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কিত ছিল পরিবার। সেই আশঙ্কা থেকেই রাতে তার বাবা কাউকে কিছু না বলে আত্মহত্যা করেছে।

এ বিষয়ে মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে উভয়পক্ষকে নোটিশ করেছি। গত ১ ফেব্রুয়ারি বসার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগকারীরাই আসেননি। না আসলে কিভাবে সুরাহা করবো? আর আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে কেন আত্মহত্যা করেছে তা জানি না।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পূর্বের কোনো বিষয়ে আমরা অবগত নই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এএআর/এটিএম

Exit mobile version