
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ কেন, একটি ম্যাচ জেতাই কঠিন- নাগপুর টেস্টের আগে এমনটি বলেছিলেন বেশ কয়েকজন অজি ক্রিকেটার। নাগপুর টেস্ট আড়াই দিনে শেষ হওয়ার পর সে কথা নিশ্চয়ই আরও বেশি করে কানে বাজছে সবার। এক সেশনেই দ্বিতীয় ইনিংসের ১০টি উইকেট হারিয়ে ভারতের কাছে ইনিংস ও ১৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে প্যাট কামিন্সের দলকে।
এর আগে, দ্বিতীয় দিনের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩২১ রান নিয়ে দিন শুরু করে স্বাগতিকরা। অজিদের আরও হতাশা উপহার দিয়েছে ভারতীয় টেল এন্ডাররা। দলীয় ৩২৮ রানের মাথায় রবীন্দ্র জাদেজা ব্যক্তিগত ৭০ রান করে ফিরলেও আক্সার প্যাটেল দৃঢ়তা দেখান। মোহাম্মদ শামির সাথে ৮ম উইকেট জুটিতে তিনি যোগ করেন ৬২ রান। শামির ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৩৭ রান। আর শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে অলরাউন্ডার আক্সারের ব্যাট থেকে আসে ৮৪ রানের ঝলমলে ইনিংস। দলের রানকে ৪০০ রানে পৌঁছলে ভারত পায় ২২৩ রানের বড় লিড। সর্বোচ্চ ১২০ রান আসে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে। অস্ট্রেলিয়ার অভিষিক্ত অফস্পিনার টড মারফি নিয়েছেন ১২৪ রানে ৭ উইকেট। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডে ২৩ নম্বর নামটি এখন এই ২২ বছর বয়সী স্পিনারের।

জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিন বিষে নীল হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার উসমান খাজার উইকেট হারায় অজিরা। ৫ রানে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হন তিনি। এরপর মারনাস লাবুশেনের উইকেটটি শিকার করেন রবীন্দ্র জাদেজা। ডেভিড ওয়ার্নার প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছেন। মাত্র ১০ রান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন এই বাঁহাতি ওপেনার।
তারপরও চলেছে অশ্বিনের ঘূর্ণিজালে আটকে পড়েছেন আরও তিন অজি মিডল অর্ডার। ম্যাট রেনশ, পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও অ্যালেক্স কেরিকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মেরুদণ্ডই ভেঙে দেন এই অফস্পিনার। দুইটি করে উইকেট তুলে নিয়ে অজিদের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজা। মাত্র ৯১ রানের অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথের অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংসটিই দলের পক্ষে সর্বোচ্চ। এর আগে, প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ১৭৭ রান। দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরমেন্সের জন্য ম্যাচ সেরা হয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা।

বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে লড়াইয়ে ফিরে আসার জন্য অনেক কিছু নিয়েই ভাবতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। দলের ইনজুরি সমস্যা কাটিয়ে ওঠা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে প্যাট কামিন্সকে। ট্রাভিস হেডকে একাদশের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তটি ঠিক ছিল কিনা, তা নিয়েও হয়তো আলোচনা হবে অজিদের ড্রেসিংরুমে। ক্যামেরন গ্রিন ও মিচেল স্টার্কের প্রত্যাবর্তন ঘটলেও সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার ফিরে আসা যে খুব সহজ হবে না, সেটাই বুঝিয়েছে ভারতের আগ্রাসী ক্রিকেট। কেবল ৯১ রানে অলআউট হওয়াই নয়, প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানে গুটিয়ে গিয়েই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল অজিরা। সেখান থেকে ভারতকে আর নাগপুরে ধরা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার।
/এম ই



Leave a reply