Site icon Jamuna Television

চমেকের দুই শিক্ষার্থী এখনও সংজ্ঞাহীন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আইসিইউতে গিয়ে হুমকির অভিযোগ

আরিফুর রহমান সবুজ:

প্রাণে বেঁচে গেলেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থী এখনও সংজ্ঞাহীন। আহত অন্য দুইজনও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ছাত্র শিবির সন্দেহে মেডিকেলের প্রধান ছাত্রাবাসে একটি ‘টর্চার সেলে’ গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মারধরের পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আইসিইউতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অচেতন অবস্থায় সিটিস্ক্যানের জন্য বের করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেনকে। হাত পা-সহ পুরো শরীরের পাশাপাশি মাথায় প্রচন্ড আঘাত রয়েছে তার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এই ভবিষ্যৎ চিকিৎসক।

একই অবস্থা, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন জাহিদ হোসেন ওয়াকিল। অভিযোগ রয়েছে, সাকিব-ওয়াকিলসহ তাদের আরও দুই সহপাঠী আবু রাইয়াত এবং মোবাশ্বিরকে শিবির সন্দেহে মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে গত বুধবার রাতভর নির্যাতন করে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।

মারধরের বিষয়ে যেন মুখ খোলা না হয়, সে বিষয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এসে হুমকি দিয়ে যান জাহিদকে, এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর বাবা। জাহিদের বাবা ফরহাদ মাস্টার বলেন, আমরা আইসিইউতে আছি। এটা সংরক্ষিত এলাকা। এখানে কীভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ঢুকতে পারে! আমরা প্রশাসন এবং এখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা চাই।

জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় সাকিবকে। পর্যায়ক্রমে ওই টর্চার সেলে ডাক পড়ে জাহিদ, রাইয়াত এবং মোবাশ্বেরের। এই টর্চার সেলের কথা আগে থেকেই জানতেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে কেউই রাজি নয়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাকিব এবং জাহিদের সহপাঠীরা জানান, এসব আগে থেকেই হয়ে আসছে। কারও সাথে ব্যক্তিগত রেষারেষি থাকলে শিবির পরিচয়ের কথা বলে সেই টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। তবে, এর আগে এই টর্চার সেলের কথা কখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

এ ঘটনায় ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, আমাদের ছাত্ররা বলছে না ওদেরকে নির্যাতন করা হয়েছে বা, কে নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও আইনগত কোনো পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসছে না।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ সক্রিয়। এক গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং অপর গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সমর্থিত। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় মাহাদি জে আকিব নামের এক ছাত্রের মাথার খুলি ভেঙে গিয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: চমেকে শিবির সন্দেহে ৪ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

/এম ই

Exit mobile version