Site icon Jamuna Television

পুঁজিবাজারে অস্থিরতা, নানা উদ্যোগেও থামছে না দরপতন

আলমগীর হোসেন:

নানা উদ্যোগেরই পরও সুখবর নেই পুঁজিবাজারে। কয়েক মাস ধরেই চলছে দরপতন। টানা দরপতনে নিঃস্ব সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বৈত নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে সময় প্রয়োজন। তারা দিচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ।

পুঁজিবাজারে দেড় শতাধিক কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পরও বাড়ছে না লেনদেনের পরিমাণ। বেশিরভাগ শেয়ারের দরই আটকে আছে তলানিতে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। তারল্য সংকটের মধ্যে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বলেন, মার্কেটের মধ্যে সার্কাস চলছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংকট কাটিয়ে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়বে পুঁজিবাজার। ঋণের ওপর প্রভিশন কমিয়ে আনায় প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়বে। তবে সুফল পেতে আরও কিছুটা সময় দরকার বলেও মনে করেন তারা। বিনিময় সিকিউরিটিজ’র সিওও সুব্রত রায় বলেন, সবকিছুই যেহেতু ইতিবাচক, তাই অবশ্যই পুঁজিবাজার বিনিয়োগবান্ধব হবে। বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার থেকে ভালো রিটার্ন পাবে। মানুষের আস্থাও ফিরে আসছে। সাময়িকভাবে হয়তো এখন বাজার কিছুটা উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে, সবশেষে বাজার ভালো দিকেই যাবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সিনিয়র সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, বাজার মনে হচ্ছে এখন একটা পিকআপের জন্য তৈরি হচ্ছে। প্রভিশন ২ থেকে ১ শতাংশ করা হয়েছে। এর একটি ফলাফলও দ্রুতই আসবে।

মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, সবকিছুরই ফলাফল আসার জন্য একটি সময় দরকার। প্রভিশন আমাদের অনেক দিনের দাবি ছিল। সেই প্রভিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো এখন আমরা ব্যাংক থেকে ফাইন্যান্স পেলে ফাইন্যান্সের যোগান বাড়বে। মানি মার্কেট যেহেতু একটু সংকুচিত, এটা বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করে।

বন্ড এবং মিউচুয়াল ফান্ডকে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখা হলে বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়বে। যা তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে বলেও জানান তারা। মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, এনবিআরকে আমরা বলেছিলাম, ডিভিডেন্টকে ট্যাক্সের কাছে বাইরে রাখার জন্য। কারণ, একবার ট্যাক্স দেয়ার পরই তো ডিভিডেন্ট ডিক্লেয়ার করা হয়। সেটার উপর আবার সর্বোচ্চ হারে কর দিতে হলে বিনিয়োগকারীদের আর ডিভিডেন্টের উপর আগ্রহ থাকে না। এতে বাজারে অস্থিরতা বাড়ে।

বাজারে অস্থিরতা কমাতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার কথাও বলেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সিনিয়র সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, বন্ড এবং ট্রেজারি বিল- এই জিনিসগুলো এক্সপোজারের বাইরে যদি থাকে তাহলে পুঁজিবাজারে ৬-৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগযোগ্য সক্ষমতা বেড়ে যাবে। এখন সূচক যেখানে আছে, তা থেকে অনেকখানি বাড়বে।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে ৩শ’ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা ব্যবসায়ীদের

/এম ই

Exit mobile version