Site icon Jamuna Television

ঐতিহ্যবাহী কেফিয়্যাহ, গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফিলিস্তিনের যে বস্ত্র

ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী পোষাক কেফিয়্যাহ। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন সংগ্রামের প্রতীক ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেফিয়্যাহ। মাথায় পেঁচানো চার কোণা বস্ত্রটির গুরুত্ব তাদের কাছে অপরিসীম। বর্তমানে গোটা মুসলিম বিশ্বেই রয়েছে এর জনপ্রিয়তা। এমনকি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলাসহ অনেক রথী-মহারথীরাও পরেছেন এ পোশাক। বর্তমানে ফিলিস্তিনের হেবরনে অবস্থিত হিরবাউই ফ্যাক্টরি দেশটির একমাত্র কেফিয়্যাহ তৈরির কারখানা। দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরেন অবস্থিত কারখানাটি ৬২ বছর ধরে তৈরি করছে এ পোশাক।

১৯৬১ সালে দুটি মেশিন নিয়ে হিরবাউই নামের এক বণিক এই কারাখানা তৈরি করেন। তিন বছর পর মেশিনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ তে। বর্তমানে ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত ৮০ শতাংশ কেফিয়্যাহই ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়।

ফ্যাক্টরি মালিকের ছেলে ইজাত হিরবাউই বলেন, ১৯৬১ সালে আমার বাবা এই ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বণিক ছিলেন এবং সিরিয়া থেকে কেফিয়্যাহ আমদানি করতেন। পরে তার মনে হলো, এই কেফিয়্যাহ তো ফিলিস্তিনি পোশাক। যখন ফিলিস্তিনিরাই এটি বানাতে পারে তখন কেন বিদেশিদেরটা ব্যবহার করবো আমরা। পরে দুটি মেশিন নিয়ে বাবা এই ফ্যাক্টরি শুরু করেন।

ঐতিহ্যবাহী কেফিয়্যাহ পরিহিত ইয়াছির আরাফাত। ছবি : সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, আগে অনেক দেশ থেকেই কাঁচামাল কিনতাম। তবে, এখন আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা সুতা ভারত থেকে পাই। আমার ধারণা, এই সুতাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর সুতা। আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে এখন বাহারি রঙের কেফিয়্যাহ বানাই আমরা। তবে, সাদা-কালোই বেশি তৈরি করি।

একটি কেফিয়্যাহ উৎপাদনে সময় লাগে অন্তত দেড় ঘণ্টা। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ কেফিয়্যাহ তৈরি হয় কারখানাটিতে। চারকোণা এই পোশাক মূলত সাদা-কালো হলেও আকৃতি ঠিক রেখে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে বানানো হচ্ছে বাহারি রঙ আর ডিজাইনে। অন্তত ৩০০ ধরণের আর ৭০ রঙের কেফিয়্যাহ বানায় ফাক্টরিটি।

সাদা-কালো কেফিয়্যাহ, ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের নামানুসারে পরিচিত পেয়েছে আরাফাতিয়্যাহ নামেও। এই পোশাকের জনপ্রিয়তা এখন বিশ্বজুড়েই। নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তিদের মাথায়ও শোভা পেয়েছে এটি।

এএআর/

Exit mobile version