Site icon Jamuna Television

হাথুরুসিংহে: ডিসিপ্লিন ভাঙায় হয়েছিলেন বরখাস্ত, খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন অবহেলিত

চান্দিকা হাথুরুসিংহে। ফাইল ছবি।

কড়া হেডমাস্টার চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহের আছে বিষাদময় অতীত। যে ডিসিপ্লিনের জন্য তিনি বিখ্যাত, নিজে সেই ডিসিপ্লিন ভাঙার জন্য হয়েছিলেন বরখাস্ত। খেলোয়াড়ি জীবনে কখনোই ছিলেন না ফাস্ট চয়েজ, ছিলেন না গিফটেড কোন ক্রিকেটার । ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কিছু ভুল করেছেন, যে কারণে চান না তার ছাত্ররাও তার মতো ভুল করুক। কেমন খেলোয়াড় ছিলেন হাথুরুসিংহে? কেন তার কোচিং দর্শনে এমন আপোষহীন আচরণ?

সালটা ২০১০, জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে মুখোমুখি জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ফাইনালের ঠিক আগেই দল ছাড়লেন শ্রীলঙ্কার ততকালিন শ্যাডো কোচ চান্ডিকা হাথুরাসিংহে। কারণ, ক’দিন পরই অস্ট্রেলিয়াতে অ্যাডভান্সড লেভেল-৩ কোচিং কোর্স করতে যাওয়ার আগে দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। এই ব্যাপারে ছিল না ক্রিকেট বোর্ডের সম্মতি। উল্টো সিরিজের পর সরাসরি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য বোর্ড বিমান ভাড়া ও সমস্ত খরচ দিতেও রাজি হয়েছিল। কিন্তু একগুয়ে স্বভাবের হাথুরু শুনেছেন নিজের মনের কথাই। ফলশ্রুতিতে লঙ্কা দলের ছায়া কোচের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাকে।

স্কুল জীবনেও কখনো নিজের স্কুলের প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি তিনি। ১৯৮৬ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ মিলেছিল তামিল ইউনিয়নের সুপারিশে। যদিও তার কলেজ আনন্দ কলেজ তার জন্য সুপারিশ করেনি। শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলে ধামিক্কা রানাতুঙ্গার ব্যাক আপ ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেয়ে ৩ ম্যাচে ৩ হাফ সেঞ্চুরি করা হাথুরুসিংহে ৮ বছরে খেলেছেন মাত্র ২৬টি টেস্ট। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানের সাথে সিরিজে টপ স্কোরার হয়েও সুযোগ পাননি বিশ্বকাপ দলে। ’৯৯ এর বিশ্বকাপে দলে থেকেও খেলেননি একটি ম্যাচ। ২৬ টেস্ট আর ৩৫ ওডিআইতেই শেষ হয় তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

অবহেলিত হাথুরুসিংহে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার আগে পরপর তিন সিজন ছিলেন ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট । অবসর নেয়ার সময় তার নামের পাশে দশ হাজারের বেশি রান, ৪২৫ উইকেট।

খেলোয়াড়ি জীবনে কখনোই গিফটেড ছিলেন না, করে গেছেন পরিশ্রম। তাইতো তার কোচিং দর্শনটাও সেরকম। নিজে যে ভুলগুলো করেছেন সেগুলো করতে দিতে চান না তার ছাত্রদের। শিক্ষক হিসেবে ধারণ করেছেন কড়া হেডমাস্টারের রূপ। ছাত্রদের কাছ থেকে একটা বিষয়ই তিনি বারবার চান, আর সেটা হলো সততা। আরও বিস্তারিত বললে বোঝায় নিজের পেশার প্রতি দায়বদ্ধতা। এই সততার সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম, আর এখানেই হাথুরুর সাথে দ্বন্ধ তৈরি তৈরি হয় খেলোয়াড়দের। দেখার বিষয়, এই যাত্রায় সাকিবদের পেশাদারিত্বের সততার সাথে হাথুরুর ডিকশনারির সততার সংজ্ঞাটা মিলে যায় কিনা।

/এমএন

Exit mobile version