বিপুল অংকের বরাদ্দ থাকলেও সেবা পাচ্ছেন না বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের রোগীরা

|

ফাইল ছবি

স্টাফ করেসপনডেন্ট, বরিশাল:

সরকারি প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল এবং স্থানীয়ভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের জন্য ওষুধ কিনতে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আইভি ক্যানোলা, গজ, ব্যান্ডেজসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ আরও দুই কোটি টাকা। অথচ জেনারেল হাসপাতালের রোগীরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী। বেশিরভাগ চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে হচ্ছে পকেটের টাকায়। এমন অবস্থায় বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে সারাদিন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বিচরণ নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

সরকারি হাসপাতালে রোগীরা ওষুধ পাবে বিনা পয়সায়। এজন্য বিপুল অঙ্কের বরাদ্দও দেয় সরকার। অথচ বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে সেই সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা। সেবা প্রত্যাশীদের ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে।

শুধু বহিঃর্বিভাগই নয়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদেরও ওষুধ সহ নানা চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে হয় নিজেদের টাকায়। অথচ স্থানীয়ভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে ওষুধ কেনার জন্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়েছে প্রায় কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য কেনাকাটার জন্য বরাদ্দ আরও ২ কোটি। গেলো অক্টোবরে টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করছে না ঠিকাদার।

গত বছর ফেরত গেছে বরাদ্দের ২ কোটি টাকা। এ বছরও প্রায় সোয়া কোটি টাকা ফেরত দেয়ার পায়তারা চলছে। যদিও হাসপাতালের আরএমও বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন ভিন্নভাবে।

বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল এ প্রসঙ্গে বলেন, কোভিড যদি না আসতো তাহলে রোগী কমে যেতো, সরকারি হাসপাতালগুলোতে পেশেন্ট আসতো না। এরকম প্রবলেম মাঝেমাঝেই তৈরি হয়।

গুঞ্জন আছে, বিভিন্ন কোম্পানিকে সুযোগ করে দিতেই সরকারি বরাদ্দের পুরোটা ব্যয় হচ্ছে না। অভিযোগের প্রমাণ মিললো সকাল ৯টার আগেই হাসপাতালের সামনে মোটরসাইকেলের লম্বা লাইনে। ফুটপাত আর হাসপাতালের বরান্দায় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের গোল মিটিং। রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নেয়ার জন্য রীতিমত কাড়াকাড়ি।

ওষুধ কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বললেন, ডক্টরদের কাছে প্রোডাক্টের প্রমোশন করি। পরে প্রেসক্রিপশনে ডাক্তাররা কী ওষুধ লিখলেন সে প্রেসক্রিপশনগুলো আমরা দেখি। হাসপাতালের আশেপাশে আমাদেরকে ঘুরতে হয়, অর্ডার এনশিওর করতে হয়।

সিভিল সার্জনের দাবি, তারা কঠোর অবস্থানে থাকায়, গেল এক মাসে হাসপাতালের চিত্র পাল্টে গেছে। বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বললেন, এর আগে ছিলো। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে, গত দুই সপ্তাহ ধরে খুবই কঠোরভাবে এই ব্যাপারটা আমরা দেখছি।

প্রসঙ্গত, শনি ও বুধবার; সপ্তাহে এই দুই দিন, দুপুর ১টার পরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি আছে। তবে বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন দক্ষিণের বৃহত্তম এ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply