Site icon Jamuna Television

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষদের ওপর ভর্তুকির চাপ; বিশ্লেষকদের মত

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে সংকটের মুখে শিল্প উৎপাদন। নতুন করে ৫ ভাগ দাম বাড়ায় বাড়বে উৎপাদন ব্যয়। অন্যদিকে পণ্যের দামেও পড়বে নেতিবাচক প্রভাব। উদ্যোক্তারা বলছেন, এভাবে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে স্বাভাবিক উৎপাদন টিকিয়ে রাখা কঠিন। এ বিষয়ে আগে থেকেই রোডম্যাপ থাকা দরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষদের ওপরই ঠেলে দেয়া হচ্ছে ভর্তুকির চাপ।

অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির বড় অংশই এই খাতের অবদান। নানামুখী সংকটে ব্যহত হচ্ছে এই খাতের উৎপাদন। শুধু এসএমই’ই নয়, সার্বিক ভাবেই চাপে পড়েছে সব ধরণের শিল্প খাত। সবশেষ নতুন করে ৫ ভাগ বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। এতে ক্ষুদ্র শিল্পের গ্রাহকদের জন্য গড় বিদ্যুতের দাম ৯ টাকা ৪১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ টাকা ৮৮ পয়সা। মধ্যম চাপের শিল্প গ্রাহকদের গড় দাম নির্ধারণ হয়েছে ৯ টাকা ৭২ পয়সা। ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, জ্বালানির দাম বাড়ানো উচিত ছিল কি? হ্যাঁ, ছিল। কিন্তু তাই বলে একজন অতি ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তা এবং একটি বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠীকে একই দরে ফেলে দেয়া! এটা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

নানা কারণে ব্যাহত হচ্ছে বড় শিল্পের উৎপাদন। তৈরি পোশাক খাতের রফতানিও কমেছে; সবশেষ ইপিবি তথ্য তাই বলছে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সবকিছুর মূল্য বেড়েছে। তাতে আমাদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। সেই সাথে, বিশ্বমন্দার কারণে রফতানি মূল্য কমে গিয়েছে। আমরা তাই বর্তমান মূল্যেই অনেক ক্ষেত্রে অর্ডার নিতে পারছি না। ফলে, আমাদের লাভ তো এখন একদমই নাই। লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে।

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে আরও লাগামহীন হবে নিত্য পণ্যের দাম। আয় না বাড়ায় কঠিন হবে স্বাভাবিক জীবন ধারণ। বলা হচ্ছে, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। এক্ষেত্রে বিকল্প চিন্তার সুযোগ নিতে হবে। সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, দাম বাড়ার ক্ষেত্রে যতটা না আমাদের বৈশ্বিক পরিস্থিতি দায়ী, তার থেকে অনেক বেশি দায়ী আমাদের ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের ঘাটতি। আমাদের বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও সুশাসনের জায়গা যদি আমরা দ্রুত ঠিক করতে না পারি, তবে আগামী দিনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আর, দিনশেষে ভুক্তভোগী হবে সাধারণ মানুষ।

/এম ই

Exit mobile version