Site icon Jamuna Television

তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের এক মাস, এখনও চলছে মরদেহের সন্ধান

একের পর এক ভূমিকম্পে ভয়াবহ একটি মাস পার করলো তুরস্ক-সিরিয়ার মানুষ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি হওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের একমাস পরও চলছে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মরদেহের সন্ধান। যারা ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছেন, এখন তাদের চলছে টিকে থাকার প্রাণপণ লড়াই। স্বজন হারিয়ে, সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিতান্তই নিঃস্ব এসব মানুষ। খবর আল জাজিরার।

এই ভূমিকম্প দু’দেশের অন্তত সাড়ে তিন লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহতার চিহ্ন রয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে দুই লাখ স্থাপনা। এ পর্যন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে পঞ্চাশ হাজারের বেশি। নিখোঁজ আছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্কের প্রায় দেড় কোটি মানুষ। সিরিয়ায়ও হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি।

এক মাস পরও এখনও চলছে ধ্বংসস্তূপ সারানোর কাজ। সেখানে প্রতিদিনই মিলছে মরদেহ। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত ১১ প্রদেশে লাখ লাখ টন কংক্রিটের এই স্তূপ সরাতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।

এদিকে, যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাদের এখন টিকে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে। চিকিৎসা সামগ্রীর স্বল্পতা, বিশুদ্ধ পানির অভাব, কলেরার বিস্তারসহ নানামুখী সংকটে দুর্বিষহ দিন কাটছে ক্ষতিগ্রস্তদের।

তুরস্কের দুর্গত এলাকাগুলোর বেশিরভাগ ভবনই ছিল বেশ পুরনো। নতুনগুলোতেও মানা হয়নি সুরক্ষা বিধিমালা। এছাড়া ভোরে ভূমিকম্প হওয়ায় অধিকাংশ মানুষই বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। প্রাণ রক্ষার সুযোগটুকুও পাননি তারা। বিশেষজ্ঞদের মত, এ কারণেই এত ক্ষয়ক্ষতি আর প্রাণহানি।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ভূমিকম্পে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে তুরস্কের। দেশটির অর্থনীতিতে দুর্যোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরইমধ্যে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। দুর্গত এলাকাগুলো পুনর্গঠনেও খরচ হবে বিপুল অর্থ।

এদিকে, ভূমিকম্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে তুর্কি সরকার। অভিযোগ, এরদোগান প্রশাসনের দুর্নীতি আর দূরদর্শীতার অভাবে বাস্তবায়ন হয়নি ভবন সুরক্ষা নীতিমালা। যদিও ভবন নির্মাণে গাফিলতির কারণে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে প্রশাসন।

এছাড়া, উদ্ধার অভিযানে ধীরগতির অভিযোগও উঠেছে। সামনেই দেশটির নির্বাচন। ধারণা করা হচ্ছে, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে এরদোগানকে।

এসজেড/

Exit mobile version