Site icon Jamuna Television

স্থানীয় চোরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক মেয়রের ব্যানার

চোরদের উদ্দেশে ব্যানারটি টানিয়েছেন জনপ্রিয় ও প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের মামা ও সাবেক পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী শেখ।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নেত্রকোণা:

কয়েক দিন পরপরই চুরি হয় বাসা-বাড়িতে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ জানানো হয় থানা-পুলিশকে। কিন্তু, কিছুতেই কিছু হয়নি। কিছুক্ষণের জন্য ঘর খালি রেখে বাইরে গেলেই ঘটে চুরির ঘটনা। অবশেষে চোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে বাড়ির সামনে বড় ব্যানার টানিয়ে চোরদেরকে সদয় হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন নেত্রকোনার সাবেক এক পৌর মেয়র।

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ দৌলতপুর এলাকার শেখবাড়ীর বাসিন্দা ও সাবেক পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী শেখ এ ব্যানারটি টানিয়েছেন। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সাবেক পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী শেখ নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের মামা।

মাহবুবুন নবী শেখ এর সেই ব্যানার।

ব্যানারে মাহবুবুন নবী শেখ লেখেন, ‘চুরির সঙ্গে সম্পৃক্তদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমাদের বাড়িতে চুরি করার মতো মূল্যবান কোনো সম্পদ নেই। তাই আমাদের বাড়িতে চুরির চেষ্টা করা আপনাদের মূল্যবান সময়ের অপচয়। অপরদিকে, চুরির পর ঘর গোছানো আমাদের জন্য কষ্টের কাজ। ভবিষ্যতে চুরির পরিকল্পনায় বিষয়গুলি আমলে নেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।’

জানতে চাইলে সাবেক এ পৌর মেয়র বলেন, মোহনগঞ্জ পৌর শহরে চুরির ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। প্রতিদিন কয়েকটা করে চুরির ঘটনা ঘটছে। আমার বাসায় গত কয়েক দিনে চারবার চুরি হয়েছে। চোরেরা এতোটাই কৌশলী যে একমুহূর্তের জন্য ঘরের বাইরে গেলেও কিছু না কিছু চুরি করে নিয়ে যায়। তালা দিয়েও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। পুলিশে জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। পুলিশ চোর ধরে আদালতে পাঠালে পরদিনই তারা জামিনে এসে আবার চুরি করা শুরু করে। চোরদের কাছে আমরা অসহায়। তাই ব্যানারে লিখে চোরের কাছেই অনুরোধ জানিয়েছি।’

মোহনগঞ্জ পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জ পৌর শহরে কয়েক মাস ধরে চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শহরের তিন-চারটি চুরির ঘটনা ঘটছে। শহরের বাসিন্দারা চোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায়ও ঘরে প্রবেশ করে চুরি করছে। গ্রিল কেটে ও শক্ত তালা ভেঙে চোর ঢোকে বলেও জানান তিনি।

মোহনগঞ্জ পৌর শহরের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা শ্যামল মোল্লাহ বলেন, মাস খানেকের মধ্যে বাজারের চার-পাঁচটি দোকানে চুরি হয়েছে। লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। চুরি রোধে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে পাহারাদার টিম করা প্রয়োজন। পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এবং আমরাও পুলিশের সঙ্গে তথ্য বিনিয়ম করতে পারলে চুরি রোধ করা সম্ভব বলে প্রত্যাশা তার।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটা চুরির ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। চুরির ঘটনায় গত কয়েক মাসে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। এছাড়া বাজারে চুরির ঘটনায় একটি বড় চোর চক্রকে গ্রেফতার করে মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। কিছুদিন পর জামিনে এসে আবার চুরি শুরু করলে ফের তাদের গ্রেফতার করেছি। শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাতের পাহারাও বাড়ানো হয়েছে। চুরি রোধে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জনগণকেও চুরি রোধে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানান তিনি।

/এসএইচ

Exit mobile version