Site icon Jamuna Television

ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ক্ষতির মুখে রাজবাড়ীর গম চাষিরা

ব্লাস্ট আক্রান্ত গম হাতে একজন ভুক্তভোগী কৃষক।

রাজবাড়ী প্রতিনিধি:

চলতি মৌসুমে খাদ্য শস্য গম চাষে রাজবাড়ীতে ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন গম চাষিরা। রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজাপুর, শায়েস্তাপুর ও কৈজুরি মাঠের প্রায় একশো একর জমিতে দেখা গেছে এই রোগ।

কৃষকরা বলছেন, রোগটি হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে। গম পরিপক্ব হবার আগেই শীষ সোনালী বর্ণ হয়ে মনে হচ্ছে পেকে গেছে। কিন্তু শীষের ভেতর কোনো দানা নেই। কৃষি অফিসকে জানানোর পরেও সরজমিনে আসেননি কোনো কর্মকর্তা। শুধু ফোনে পরামর্শ দিয়েছেন। তা প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হয়নি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে গমের। বাতাসে ঢেউ খেলছে গমের সোনালি শীষ। দেখে মনে হচ্ছে গম পেকে গেছে। আসলে গমের বেশিরভাগ শীষে দানা নেই। শীষের সঙ্গে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছও।

এদিকে এক বিঘা জমিতে খেত প্রস্তুত থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত চাষিদের সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এছাড়া লিজ নেয়া জমি হলে বিঘায় খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। যা এবার পুরোটাই লোকসান হচ্ছে। অপরদিকে অন্য এলাকার বেশ ভাল হয়েছে দাবি কৃষি বিভাগের।

এ বছর রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। পুরো জেলায় চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ।

এবার গম চাষে সম্পূর্ণ লোকসান গুনতে হবে জানিয়ে কৃষকরা বলেন, আগামীতে চাষাবাদের জন্য বীজও হবে না এবারের আবাদ থেকে। ফলে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক কৃষকদের মাঝে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী বারি-৩৩ জাতের বীজ সরবরাহ করলেও তা ছিল চাহিদার তুলনায় কম। ফলে কৃষকরা বারি ২৮ ও ২৯ সহ বিভিন্ন পুরনো জাতের বীজ বপন করেন। এসব পুরনো জাতের বীজ বপন করায় বিক্ষিপ্তভাবে দেখা দিয়েছে এই রোগ।

চাষিরা জানান, শত শত বিঘা জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে এই এলাকায়। লাভের আশায় প্রায় প্রত্যেকেই দায়-দেনা করে আবাদ করে। কিন্তু ফলন শুরুর পর থেকে গম নষ্ট গেছে। একাধিকবার কৃষি অফিসারদের জানিয়েছি। কিন্তু তারা একবারের জন্য দেখতেও আসেনি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার জনি খান বলেন, কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত আকারে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। আমরা আশপাশের কৃষকদের ব্লাস্ট দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ দিয়েছি। তারা সে মোতাবেক বিভিন্ন বালাইনাশক স্প্রে করছে। পাশাপাশি পরবর্তী মৌসুমে যখন গম আবাদ করবে তখন ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত বারি-৩৩ গম যেন চাষ করে সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এএআর/

Exit mobile version