Site icon Jamuna Television

উত্তেজনার মধ্যেই শি জিনপিংয়ের মস্কো সফর, সামরিক সহায়তা নাকি মধ্যস্থতা, উদ্দেশ্য কী?

পশ্চিমাদের সাথে উত্তেজনার মধ্যেই মস্কো সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এমন এক সময়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন চীনা প্রেসিডেন্ট, যখন আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। বেইজিংয়ের তরফ থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও, বিশ্লেষকরা মনে করছেন অস্থিতিশীল মুহূর্তে রাশিয়ার পাশে থাকার স্পষ্ট বার্তাই দিচ্ছে শি’র এই মস্কো যাত্রা। অবশ্য তার মূল উদ্দেশ্য কী হতে পারে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে রয়েছে দ্বিমত। খবর বিবিসির।

তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শি জিনপিংয়ের এটিই প্রথম বিদেশ সফর। গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে তিনি রাশিয়াকেই বেছে নিয়েছেন। এরই মাধ্যমে চীনের কাছে রাশিয়ার গুরুত্ব আবারও বিশ্বকে বুঝিয়ে দিলেন শি।

এদিকে, এই সফরে পুতিন-শি বৈঠকে রাশিয়া ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারকেই গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, গত কয়েক বছরে প্রেসিডেন্ট শি ও প্রেসিডেন্ট পুতিন ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখেছেন। আস্থা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে সাধারণ উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শি’র এই ভ্রমণ মস্কোর প্রতি তাদের সমর্থনের বিষয়টিও স্পষ্ট করছে বলে মনে করছেন অনেকে। রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলেও ধারণা করছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু স্মল বলছেন, অন্য দেশকে শত্রু বানাতে না চাইলেও রাশিয়াকে বিপদে ফেলতেও চাইছে না চীন। জটিল মুহূর্তে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ককে মূল্য দিচ্ছেন শি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইঙ্গিত আছে।

সৌদি-ইরান সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে মধ্যস্থতার মধ্য দিয়ে সম্প্রতি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করেছে চীন। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও ১২ দফা শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল বেইজিং। যদিও তা সফল হয়নি। আর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পশ্চিমাদের আস্থাও নেই চীনের ওপর। এর মধ্যেও আন্তর্জাতিক মহলে চীনের প্রভাব বিস্তারের যে প্রচেষ্টা তারই অংশ হিসেবে এই সফরকে দেখছেন কেউ কেউ।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ওয়াং জিয়ানগিউ এর মতে, যুদ্ধ বন্ধ করতে দু’পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে পারলে তা হবে চীনের বড় অর্জন। শি জিনপিংয়ের ইতিবাচক ভূমিকা আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের পথে তাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেবে।

ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর এখনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো নিন্দা প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি চীন। যুদ্ধ শুরুর আগেই, গত বছর শীতকালীন অলিম্পিকের সময় চীন সফরে শি’র সাথে সাক্ষাৎ হয় পুতিনের। তখনই পরস্পরকে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্বের প্রতিশ্রুতি দেন তারা।

এসজেড/

Exit mobile version