Site icon Jamuna Television

এল ক্লাসিকো: মাঝমাঠে গাভি-ডি ইয়ং’এ ম্লান ক্রুজ-মদ্রিচ

ছবি: সংগৃহীত

সার্জি রবার্তো ও ফ্র্যাঙ্ক কেসির গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে ঘরে মাঠে হারিয়ে লা লিগার শিরোপা স্বপ্ন অনেকটাই স্পষ্ট করেছে এফসি বার্সেলোনা। এই ম্যাচে আরও স্পষ্ট হয়েছে, মিডফিল্ডে মাস্টারক্লাসে পরাভূত হতে পারেন টনি ক্রুজ-লুকা মদ্রিচদের নিয়ে গড়া রিয়াল মাদ্রিদের বিশ্বসেরা মধ্যমাঠ। ক্যাম্প ন্যুতে যেমন গাভি-ডি ইয়ংদের টানা প্রেসিংয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন ৩৭’এ পা রাখা লুকা মদ্রিচ ও ৩৩ বছর বয়সী টনি ক্রুজ।

ক্যাম্প ন্যুতে লা লিগার মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ইনজুরির কারণে ছিলেন না বার্সার মধ্যমাঠের প্রাণভোমরা পেদ্রি। তবে ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং-গাভি-বুসকেটসদের মাস্টারক্লাসে তীব্রভাবে অনুভূত হয়নি পেদ্রির অভাব। কর্নারের সময় সেন্ট্রাল ডিফেন্স, কিংবা আক্রমণের সময় ওভারল্যাপ করে উপরে ওঠা; কোথায় ছিলেন না ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং! গত গ্রীষ্মেই অবশ্য এই ডাচ মিডফিল্ডারকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল বার্সা। কিন্তু ক্যাম্প ন্যুতে গত রাতের পারফরমেন্সের পর বার্সা কর্তাব্যক্তিরা সেই ভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিতে পারেন। কারণ, এখনও পর্যন্ত এল ক্লাসিকোতে নিজের পারফরমেন্স এবারই দেখালেন ফ্র্যাঙ্কি। টনি ক্রুজ-লুকা মদ্রিচদের অভিজ্ঞতার সাথে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে নিয়ে গড়া রিয়ালের শক্তিশালী মিডফিল্ডকে ম্লান করে দেয়া যে প্রচণ্ড কঠিন, তা হয়তো স্বীকার করবে ইউরোপ সেরা অন্যান্য দলগুলো।

ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু ফ্র্যাঙ্কির পারফরমেন্সে মনে হলো, সহজেই এই কাজ করা যায়! ৫টি ছাড়া বাকি সব পাসই ঠিকঠাক সম্পন্ন করেছেন এই ডাচ খেলোয়াড়। সেই সাথে, ৫টি চান্সও তৈরি করেছেন তিনি। নিজেদের ডি বক্সের আশেপাশে বল পেয়ে একাধিকবার দুর্দান্ত স্প্রিন্টে বল নিয়ে গেছেন প্রতিপক্ষের সীমানায়। রিয়াল যখনই আরও বেশি করে চাপ সৃষ্টি করতে যাচ্ছিল, ফ্র্যাঙ্কির বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত ও দারুইণ স্কিলে বার্সা রক্ষণের চাপও কমে গেছে অনেকবার। চার বছর আগে এরকপম একজন খেলোয়াড়ের আশায়ই ফ্র্যাঙ্কিকে দলে ভেড়ায় বার্সা। কাতালানদের জন্য সুখবর, ফ্র্যাঙ্কি যে তার মাস্টারক্লাস জমিয়ে রাখেন বড় ম্যাচের জন্য!

প্রতিপক্ষ সমর্থকরা তাকে ‘কসাই’ বলে ডাকে। তবে নিজ দল ও সমর্থকদের কাছে দারুণ প্রিয় পাবলো মার্টিন গাভি। ক্যাম্প ন্যুতে এল ক্লাসিকোর মহারণে গাভি দেখালেন, এর কারণও অনেক। গোলের একটি সুযোগও সৃষ্টি করতে পারেননি; জাভি যেমনটা চান ঠিক সেভাবে প্রতিপক্ষের রক্ষণে আতঙ্কও সৃষ্টি করতে পারেননি গাভি। এর বদলে, রিয়াল ফুটবলারদের জীবনকে ৯০ মিনিটের জন্য নরকে পরিণত করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি ১৮ বছর বয়সী এই টিনএজার। ড্যানি কারভাহালের সাথে মাঠে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে তার। শেষদিকে মাঠে আসা ড্যানি সেবায়োসের সাথেও দ্রুতই লেগে যায় গাভির। একটি হলুদ কার্ড দেখেই ম্যাচটি শেষ করেন গাভি। বেপরোয়া একটি ডাইভও ছিল। ট্যাকল, চ্যালেঞ্জ ছিল বেশ কয়েকটি।

ছবি: সংগৃহীত

স্বাভাবিকভাবেই, এই পারফরমেন্স ছিল অনেকটাই বার্সা-সুলভ খেলার বিপরীত। আর এরকম ‘ডার্টি ওয়ার্ক’র সাথেও বার্সার প্লেয়িং স্টাইল খুব বেশি পরিচিত নয়। কিন্তু যখন চলে আসে শিরোপা জয়ের প্রশ্ন, তখন তৈরি হয় বিবিধ রকমের চাহিদা। আর, এরকম পারফরমেন্সই গড়ে দেয় ব্যবধান। আর গাভির যুদ্ধংদেহী পারফরমেন্স অনেকটাই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় রিয়ালকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কেবল ম্যাচ থেকেই না, লিগ শিরোপাও একতরফা করে ফেলায় বেশ ভালো ভূমিকা রাখলেন গাভি।

আরও পড়ুন: ওটা অফসাইড ছিল কিনা, সেই সন্দেহ নিয়ে ফিরবো: আনচেলত্তি

/এম ই

Exit mobile version