Site icon Jamuna Television

রমজান এলে ইয়েমেনে জমে ওঠে কোরআন বাঁধাই শিল্প

ছবি : সংগৃহীত

রমজান মাসে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না ইয়েমেনের বই বাঁধানোর কারিগররা। ছেঁড়া-ফাটা, মলিন মলাটের কোরআন শরিফ ঠিকঠাকের জন্য বাড়ছে মুসল্লিদের ভিড়। দেশটিতে যুদ্ধ-সহিংসতা লেগেই আছে, অনেক স্থাপনার সাথে নষ্ট হয়েছে পবিত্র কোরআনও। সেসবই সিয়াম সাধনার মাসে সংস্কারের হিড়িক পড়ে।

রমজান মানেই সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত। মসজিদ-মাদরাসা এমনকি ঘরেও অনেকে দেন পবিত্র গ্রন্থটির ৩০ পারা খতম। তাই পবিত্র মাসটিতে বাড়ে কোরআনের চাহিদা।

যুদ্ধ-সহিংসতায় বিপর্যস্ত ইয়েমেন। দেশটির অনেক মসজিদই বোমা হামলায় বিধ্বস্ত, জ্বলে-পুড়ে গেছে পবিত্র কোরআন শরিফও। কিন্তু, সেসব সংরক্ষণের জন্য কাজ করেন একদল মুসল্লি। রমজান এলেই তারা ছোটেন ঐতিহ্যবাহী বই বাঁধাই কারিগরদের দরজায়।

সানার ক্রেতা ইব্রাহিম আল জাইদি বলেন, আল-মাহউইত প্রদেশ থেকে ৪৭টি কোরআন নিয়ে এসেছি। কারণ, এগুলোর পৃষ্ঠা ছিঁড়ে গেছে, দলা পাকিয়ে অথবা মলাট ফেটে গেছে। সাধারণত মসজিদ থেকেই সেগুলো আনা। কারণ, রমজানের সময় প্রায় সবাই কোরআন তেলাওয়াত করেন।

সাধারণ বই নয়; পবিত্র গ্রন্থ তাই বাঁধাইও হতে হবে মজবুত। করা যাবে না গুনাহ্। তাই হালাল-হারাম বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখেন বুকবাইন্ডাররা।

সানার বই বাঁধানোর কারিগর হাশিম আল সিরাজি বলেন, কোরআন শরিফ বাঁধানোর জন্য নতুন কাগজ আর বিশেষ কাপড় লাগে। তারপর নাইলনের সুতা দিয়ে সেলাই করি। তার ওপর দেয়া হয় চামড়ার পাতলা মোড়ক। পরের ২৪ ঘণ্টা যন্ত্রের মধ্যে চাপে রাখি বইটি। নতুবা সেটি বেঁকে যাবে। পুরো একদিন রাখা হয়, কড়া রোদে।

ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় রীতিকে স্বাগত জানান মুসল্লিরাও। তাদের বক্তব্য- পবিত্র গ্রন্থের যত্ন নেয়াই মূল কথা।

ইয়েমেনের কোরআন তেলাওয়াতকারী মুহাম্মদ আল জুনদুবি বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে, শত বাধার মধ্যেও ইয়েমেনিরা কোরআনের যত্ন নেন। বই বাঁধানোর মাধ্যমে দিনের পর দিন সংরক্ষণ করছে, জানাচ্ছে সম্মান। কোনটা জায়েজ, কী হারাম সেসব নিয়েও চিন্তা করেন। মোদ্দাকথা, আল্লাহ যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেসব অনুসরণ করছেন।

পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইয়েমেনের শতভাগ জনগোষ্ঠী মুসলিম। ৬৫ শতাংশ সুন্নি; বাকিরা শিয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী।

এএআর/

Exit mobile version