Site icon Jamuna Television

সত্য প্রকাশে অবিচল থাকার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাক যমুনা টেলিভিশন

অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান:

আজ যমুনা টিভির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১০ম বছরে পদার্পণ। দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি যমুনা টিভির স্বপ্নদ্রষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব নুরুল ইসলামকে। যমুনা টিভির সিইও সম্পাদক ফাহিম আহমেদসহ প্রতিটি সদস্যকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা কৃতজ্ঞতা অভিনন্দন।

সংকটে সংগ্রামে সত্য প্রকাশে অবিচল থাকার প্রত্যয় নিয়ে দশম বছরে পদার্পণ করলো যমুনা টিভি। অভিনন্দন পুরো যমুনা পরিবারকে ।

একসময় সত্য সংবাদের জন্য রেডিওকে আমরা বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করতাম। সন্ধ্যায় বিবিসি অথবা ভয়েস অব আমেরিকা। সেই দিন এখন নেই। লাল সবুজের বাংলাদেশে দেশের নির্ভীক সাংবাদিকরাই নিজের টেলিভিশনে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সারা বিশ্বের হাজারও চ্যানেলের ভিড়ে দর্শকের কাছে সংবাদ পৌঁছে দিচ্ছে। এটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

তবে যত মিডিয়া বাড়ছে কোয়ালিটি বা বৈচিত্র্যের সীমাবদ্ধতা লক্ষণীয়। এমনিতেই অবাধ তথ্য প্রবাহের একালে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। অন্তর্জালের মায়াজালে দর্শক প্রত্যাশা অনেক বেশি। একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে যখন আমি টিভির খবর দেখতে চাই, তখন খবর দেখার তৃষ্ণা মেটাতে চ্যানেলটি আমাকে কী তথ্য দিচ্ছে? আমাকে কি আবার যাচাই বাছাই করতে হবে কিনা? গত কয়েকদিনের সংবাদপত্র দেখলে পাঠককে কী জবাব দেবেন সংবাদপত্রের সম্পাদকবৃন্দ?

লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। স্বাধীনতার ৫২ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে, দুর্নীতিবিহীন শোষণমুক্ত বঞ্চনামুক্ত জাতি গঠনে মিডিয়ার দায়বদ্ধতা আছে। আমার মিডিয়া যেন আমার দেশের সব মানুষের কথা বলে। যেন শুধু নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে।

দেশে এখন অনেক টিভি চ্যানেল, অনেক খবরের কাগজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নানা ধরন। দেশ বিদেশের কানেক্টিভিটির ভিড়ে অনেকেই অভিযোগ করেন সব চ্যানেলের বৈচিত্র্য বাড়েনি। কনটেন্টের ডাইভার্সিটি খুব কম। তবে তারপরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের শত শত মিডিয়াকর্মীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় লাল সবুজের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো ঘটনা লাইভে বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণসহ দেখতে শুনতে পারছি।

বিটিভিতে আমি অনেকদিন ধরে অনুষ্ঠান করছি। কোভিডকালে বিভিন্ন মিডিয়াতে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও অংশগ্রহণ করেছি। তবে যমুনা টিভিতে কোভিডকালে টানা প্রায় দু’বছর ‘করোনা হেল্প ডেস্ক’ নামক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি রাতে দর্শকদের সাথে থাকতে পেরেছি। তাদের পরামর্শ দিতে পেরেছি। তাদের বিপদে বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিতে পেরেছি। মানুষের ভালোবাসা কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়েছি।

ছোট্ট একটি বিষয়, কিন্তু কোনোদিন ভুলবো না। সেই ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি, ঈদের দিন নানা ধরনের বিনোদন অনুষ্ঠান দেখায় টিভি চ্যানেলগুলো। কিন্তু কোভিডের সেই বিভীষিকাকালে যখন একজন ডাক্তারের পরামর্শ একজন অসহায় মানুষকে সাহস জুগিয়েছে, কোনো সন্তান যখন তার মায়ের জন্য চিকিৎসা চেয়েছেন তখন প্রতিদিন আমি যমুনা টিভির মনিটরে হাজির হয়েছি। এমনকি ঈদের রাত ন’টায় যখন ঈদের আনন্দ মেলা হবার কথা তখন কোভিড আক্রান্ত একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য তার প্রিয়জন আমার কাছে সাহায্য নিয়েছেন যমুনার মাধ্যমে। আমার মনে হয়েছে একজন ডাক্তার হবার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানানো প্রয়োজন।

এখন যদি আমাকে প্রশ্ন করেন কেন যমুনা টিভিকে মানুষ এত ভালোবাসে? যমুনার দশ বছরে পদার্পণের এই সময়ে আমি দশটি কারণ উল্লেখ করছি।

সংবাদের গভীর থেকে গভীরে মনোনিবেশ। হোক রাজনীতি, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, শিক্ষা, শোবিজ, বিদেশের সংবাদ, রান্না, ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি ।

যমুনা টেলিভিশন এগিয়ে যাক সময়ের হাত ধরে, মানুষের বিশ্বাসে হৃদয়ের গহীনে।

লেখক: চিকিৎসক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

/এনএএস

Exit mobile version