ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধানের ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর কারণে ধানের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্রি-৬৩ ধানে এ রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। তবে কিছু ২৮ ধানের ক্ষেতেও এ রোগ দেখা দিয়েছে।
মনোহরপুর গ্রামের কৃষক মনজের আলী বলেন, এ বছর আমি দুই বিঘা জমিতে ২৮ ও ৬৩ ধানের চাষ করেছিলাম। গত কয়েক দিনে হঠাৎ ধানের শীষে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির অর্ধেকের বেশি ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
একই ইউনিয়নের মেগুরুখিদ্দা গ্রামের কৃষক ইমদাদ হোসেন জানান, আমার জমির পাশে তপন কুমার মন্ডল নামে এক কৃষক ৮ শতক জমিতে ২৮ ধান করেছিল। গত কয়েকদিনে জমির সব ধান লাল রং হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি মৌসুমে উপজেলায় ১৫ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি ধান-৬৩ চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে।
কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের খামারমুন্দিয়া গ্রামের মাঠে তরিকুল ইসলামের ১ বিঘা, দলিল উদ্দীনের ১ বিঘা, মোমিন উদ্দীনের ২ বিঘাসহ ওই এলাকার বেশ কিছু জমির ধান হঠাৎ শুকিয়ে যাচ্ছে। একইভাবে ইউনিয়নের রায়গ্রামের মাঠে তপন কুমার মন্ডলের ৮ শতক ও পরিতোষ ঘোষের এক একর জমির ধান শুকিয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানান। এদিকে ৫নং শিমলা-রোাকনপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মনজের আলীর ২ বিঘা ধান শুকিয়ে যাচ্ছে।
রায়গ্রাম ইউনিয়নের খামারমুন্দিয়া গ্রামের কৃষক দলিল উদ্দীন জানান, চলতি ইরি মৌসুমে আমি দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এর মধ্যে এক বিঘা জমিতে ব্রি-৬৩ ধান ছিল। গত কয়েকদিন আগে মাঠে গিয়ে দেখি কিছু কিছু ধানের শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। এ সময় স্থানীয় কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ীর পরামর্শে ওষুধ স্প্রে করি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কয়েকদিনে মধ্যে জমির সব ধান সাদা হয়ে গেছে। এখন ওই জমিতে একটি ধান আর হবে না।
একই মাঠের কৃষক লালন হোসেন জানান, আমার এক বিঘা জমির ধান হঠাৎ শীষে পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম রনি জানান, কোন কৃষক আমাদের এখনো জানায়নি। তবে গরমের কারণে এমনটি হতে পারে অথবা ছত্রাকের কারণেও ধানে পচন ধরে শুকিয়ে যেতে পারে। পচন রোগ দেখা দিলে ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ট্রুপার স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি।
ইউএইচ/

