চট্টগ্রাম ব্যুরো:
অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রামের ৫৪টি মার্কেট এবং ২৪টি কন্টেইনার ডিপো। ফায়ার সার্ভিস একাধিকবার নোটিশ দিলেও সুরক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেই এসব ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলোর। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ঘিঞ্জি মার্কেটে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
চট্টগ্রামের সরু গলি পথে ধরেই সারি সারি দোকান বসিয়ে তৈরি হয়েছে এসব মার্কেট। প্রতিদিন হাজারও মানুষের আনাগোনা এখানে। অথচ এসব মার্কেট এতোটাই ঘিঞ্জি যে, সূর্যের আলোও প্রবেশ করে না ঠিকমতো। চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ ও পুরনো রিয়াজ উদ্দিন বাজারের বিভিন্ন মার্কেটেও রয়েছে এমন হাজারও অলিগলি।
মালিক সমিতির হিসাবে, রিয়াজ উদ্দিন বাজার এবং তামাকুমুন্ডি লেইন মিলিয়ে ৩ শতাধিক ভবনে রয়েছে ১৮০টি মার্কেট। সেখানে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার দোকানে প্রতিনিয়ত চলছে কেনাবেচা। অথচ এমন ব্যস্ত একটি মার্কেটে গাড়ি তো দূরের কথা, হেঁটে যাওয়াই দুস্কর। ফায়ার সার্ভিসের তালিকা বলছে, দুটি মার্কেটই অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।
অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে, এমন ৫৪টি মার্কেট কর্তৃপক্ষকে ফায়ার সার্ভিস বারবার নোটিশ দিলেও কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ কম উল্লেখ করে তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত এই মার্কেটে যথেষ্ট জায়গা আমাদের নেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সাবধানে চলার।
শুধু মার্কেট নয়, ফায়ার সার্ভিসের সাম্প্রতিক জরিপে সীতাকুন্ডের শিল্প কলকারখানার অগ্নি নিরাপত্তার নাজুক চিত্র উঠে এসেছে। দেখা গেছে, ২৪টি কন্টেইনার ডিপোর কোনোটিতেই বাস্তবায়ন হয়নি ফায়ার সেফটি প্ল্যান।
এ বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবদুল হালিম মিয়া বলেন, মার্কেটের অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পেছনে যে খরচ এটিকে মানুষ অহেতুক মনে করে। কিন্তু এসব নীতিমালা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং এটি যে একটি বিনিয়োগ তা ব্যবসায়ীরা ভুলে যায়।
গত এক বছরে চট্টগ্রামের কন্টেইনার ডিপো এবং অক্সিজেন উৎপাদন কারখানায় ভয়াবহ আগুনে প্রাণ গেছে ৫৮ জনের। ঝুঁকিপূর্ণ এসব মার্কেট ও কন্টেইনার ডিপোগুলোও রয়েছে চরম বিপজ্জনক অবস্থায়। তাই সময় থাকতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এসজেড/

