Site icon Jamuna Television

কোথাও দাবানল, কোথাও গলছে বরফ; পরিবেশ বিপর্যয়ের চিহ্ন দুনিয়াজোড়া

মৌলি ইসলাম:

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত। আমেরিকা থেকে এশিয়া মহাদেশ- প্রায় সব প্রান্তেই অস্বাভাবিক তাপমাত্রা। পরিবেশের বৈরী আচরণে কোথাও হচ্ছে দাবানল; কোথাও নিচে নামছে পানির স্তর। এ পরিস্থিতিতে, বৈশ্বিক আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএমও’র শঙ্কা, ২০৬০ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে আবহাওয়ার এই নেতিবাচক রূপ।

গেলো সপ্তাহ থেকেই জ্বলছে কানাডার অ্যালবার্টা। দাবানলে পুড়ছে একলাখ হেক্টরের মতো বনভূমি। সরকার থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও এখনও লাগামহীন বহু জায়গার পরিস্থিতি। মঙ্গলবারও (১৬ মে) অঞ্চলটিতে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কানাডার অ্যালবার্টার তথ্য কর্মকর্তা হোসে স্টোঞ্জ বলেন, অ্যালবার্টার বনাঞ্চলে এখনও ৮৭ জায়গায় সক্রিয় দাবানল রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ২৪টি পুরোপুরি লাগামহীন। সরানো হয়েছে ২০ হাজারের মতো বাসিন্দাকে। তাছাড়া, ১৯টি এলাকায় স্থানীয়ভাবে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। চলতি বছর সাড়ে ৪’শর মতো দাবানলের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে, ভস্মীভূত হয়েছে ৫ লাখ ২১ হাজার হেক্টর বনভূমি।

প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রেও শুরু হয়েছে গ্রীষ্ম মৌসুম। তাপদাহে পুড়ছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলো। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ওঠানামা করবে তাপমাত্রা। স্বস্তির খোঁজে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন সুইমিংপুল বা শীতল স্থানে। স্থানীয়রা জানান, গেলো বছর, ঠিক এই মৌসুমে ভয়াবহ বন্যা-বৃষ্টি-ঘূর্ণিঝড় ছিল। এবার গ্রীষ্মকাল শুরুই হলো প্রচণ্ড দাবদাহ নিয়ে। তাদের প্রত্যাশা, মাত্রাতিরিক্ত তাপ সইতে হবে না।

শুধু আমেরিকা মহাদেশই নয়, এশিয়াতেও হল্কা ছড়াচ্ছে তাপদাহ। সোমবারও চীনের সাংহাই শহরে অনুভূত হয়েছে ৩৪ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, সহসা দেখা মিলবে না বৃষ্টির। এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক জলবায়ু বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএমও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ২০৬০ সাল পর্যন্ত প্রকৃতির এই রূদ্ররূপ দেখতে হবে বিশ্বকে। কারণ, তাপপ্রবাহ কমার কোনো লক্ষণ নেই; হিমবাহ গলে বাড়ছে সমুদ্রের উচ্চতা।

ডব্লিউএমও’র মহাসচিব পেত্তেরি তালাস বলেন, সামুদ্রিক উষ্ণতা নতুন রেকর্ড গড়েছে। অসহনীয় তাপমাত্রার কারণেই সাগর থেকে সৃষ্টি হয় মৌসুমী ঝড়-সাইক্লোন-হারিকেন ও টাইফুনের মতো দুর্যোগের। দুই দশক আগেও বছরপ্রতি সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৩; যা বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ২০৬০ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে পরিবেশের এই বৈরী রূপ।

ইউরোপের কয়েকটি দেশে এপ্রিলের মতোই মে মাসে বহাল রয়েছে তীব্র দাবদাহ। গেলো মাসে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় স্পেনে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গ্রীষ্মের শুরুতে সেই ভয়াবহতা ফিরবে আবারও।

আরও পড়ুন: কানাডায় দাবানল, অ্যালবার্টা প্রদেশের ৮৭টি স্থানে জ্বলছে আগুন

/এম ই

Exit mobile version