Site icon Jamuna Television

ফ্রেঞ্চ ওপেন: রোলা গাঁরো কে?

বছরে টেনিসের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লামের নাম ফ্রেঞ্চ ওপেন। আসর যেখানে বসে সেই স্টেডিয়ামের নাম রোঁলা গারো। তবে এই নামটি বড় কোনো টেনিস খেলোয়াড়ের নয়। এমনকি কোনো খেলাধুলার সঙ্গে যুক্তও নন তিনি। কিন্তু কেন তার নামে টেনিস স্টেডিয়ামের নামকরণ হলো? কে ছিলেন এই রোঁলা গারো?

মূলত রোঁলা গারো ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একজন নায়ক। ছিলেন বিমান চালনায় দারুণ দক্ষ। একই সাথে সরাসরি খেলার সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও পছন্দ করতেন ফুটবল, রাগবি ও সাইক্লিং এর মতো স্পোর্টস ইভেন্টগুলো।

১৮৮৮ সালের ৬ অক্টোবর, পৃথিবীতে আসেন গারো। একটি বিজনেস স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষে মাত্র ২১ বছর বয়সে নিজের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। যেখানো পুরোনো গাড়ি কেনা বেচা করতেন গারোঁ। তবে ১৯০৯ সালে নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় তার জীবন। প্রথম বারের মতো বিমান পরিচালনার শো দেখে মুগ্ধ হয়ে একটি বিমান কিনে ফেলেন গাঁরো। নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন তিনি।

আকাশে উড়ে যাওয়ার তাড়নায় ১৯১১ সালে ভাঙ্গেন নিজের রেকর্ড। হৌলগেট ব্রিজ থেকে ১৩ হাজার ফুট ওপরে বিমান চালিয়ে উড়ে বেড়িয়েছেন গারো। এরপর থেকেই বিভিন্ন এয়ার শো এবং বিমানের রেসে অংশ নিয়ে হয়ে উঠেন তারকা। এক পর্যায় মাত্র ৮ ঘণ্টায় ২০০ লিটার গ্যাসোলিনে ৭৮০ কিলোমিটার অর্থাৎ ফ্রান্স থেকে তিউনিশিয়ায় চলে যান অনায়াসেই। সেই জার্নিতে বিমানের দু’টি ইঞ্জিন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে যায়। যদিও সেটিকে মুহূর্তেই ঠিক করে ফেলেন তিনি।

অসাধারণ বিমান চালনার দক্ষতা দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিজ দেশ ফ্রান্সের হয়ে লড়েছেন গারোঁ। তবে এই যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিলো না তার জন্য। এই যুদ্ধে দু’বার গুলিবিদ্ধ হন, বন্দী হন জার্মান সৈন্যদের কাছে। সেখান থেকে পালিয়ে এসে খুব বেশী দিন বাঁচতে পারেননি তিনি। ১৯১৮ সালের ৫ অক্টোবর নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাকে।

সেই থেকেই ফ্রান্সের নায়ক বনে যান রোঁলা গারোঁ। পরবর্তীতে দেশের মানুষের কাছে গারোকে স্মরণ রাখার জন্য অভিনব এক পদ্ধতি অবলম্বন করেন গারোর বন্ধু ও ক্রীড়া সংগঠক ইমাইল লেসুয়া। ডেভিস কাপে ফরাসিদের জয়ের উপলক্ষ্যে তৈরি করা হয় এই টেনিস স্টেডিয়াম। যার নামকরণ করা হয় রোলা গারোর নামেই। যেখানে এখন প্রতিবছর বসে ফ্রেঞ্চ ওপেন।

এটিএম/

Exit mobile version