গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মা জায়েদা খাতুন জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তবে, ভোটের ফলাফল আটকে রাখার অভিযোগ তুলে তিনি জানিয়েছেন, কোনো ষড়যন্ত্র মানা হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সন্ধ্যার পর কর্মী-সমর্থকসহ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ করতে আসেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম এ সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তখন তিনি এ দাবি করেন।
আরও দাবি করেন, তার কাছে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের সব কেন্দ্রের ফলাফল রয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফলে জায়েদা খাতুন বিজয়ী হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
ফলাফল ঘোষণায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কেন দেরি করছেন জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইভিএমে ভোট শেষ হয়েছে ৪টায়। এতক্ষণ ফলাফল দিতে লাগে না। অনেক কেন্দ্রের কাউন্সিলরদের ফলাফল দেয়া হয়েছে। মেয়রের দেয়া হচ্ছে না। ফলাফল নিয়ে যদি ছিনিমিনি খেলা হয় তাহলে আমরা মানবো না। আমি গাজীপুরের গার্মেন্টসকর্মী, মালিক ও জনগণকে বলবো যদি ছিনিমিনি হয় তাহলে আপনারা প্রতিবাদ করবেন।
তিনি আরও বলেন, মেশিনের সফট কপি আমাকে দিতে হবে। দরকার হলে সিসিটিভির ফুটেজ দেখবো। আমি নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে চাই।
এদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে এখন গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মেয়র পদে ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্যে ১০৬ কেন্দ্রের ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে এই প্রার্থী পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৩৭৬ ভোট।
অপরদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৯৯৬ ভোট।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় শুরু হয় গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোট।
ভোটগ্রহণের শুরু থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের পঞ্চম তলার কন্ট্রোল রুম থেকে নির্বাচন মনিটরিং করা হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া না গেলেও ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ঢুকে পড়ায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। নির্বাচন কমিশন থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখে খবর দেয়া হলে তাদের আটক করা হয়।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী আছেন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গাজীপুর সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন।
সকালে ভোট দিয়ে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান আজমত উল্লা খান। ভোট শুরুর ৪০ মিনিট পর নিজ বাড়ির পাশে দারুস সালাম মাদারাসার ৩ নম্বর ভোটকক্ষে ভোট দেন তিনি। এ সময় ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এ প্রার্থী।
গাজীপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটদান শেষে জায়েদা খাতুন সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বলেন, ইভিএম নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। ভোটকেন্দ্রগুলোর পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো আছে ৷ এসব নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই।
/এমএন

