ঘুম আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া। প্রতিটি মানুষের সুস্থ জীবন ও দীর্ঘ জীবনীশক্তির জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু ঠিক কতখানি ঘুমালে তা পর্যাপ্ত বলে ধরা হবে?
সাধারণত ছোট বাচ্চারা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি ঘুমায় এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের সময় কমতে থাকে। তবে, ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা স্থায়ী ঘুমের সূত্রটি প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি। তবে কোন বয়সে কতটা ঘুম সঠিক ও পর্যাপ্ত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা তা জেনে নিন।
ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন বলছে, বয়স অনুযায়ী মানুষের ঘুমের সময়টাও ভিন্ন হবে। অধিকাংশ মানুষই অভিযোগ করেন, বয়স অনুযায়ী যথেষ্ট ঘুম হচ্ছে না, কিন্তু সেই যথেষ্ট বলতে কতটুকু?
ফাউন্ডেশনের গবেষণা বলছে, এই প্রশ্নের উত্তর আসলে নির্ভর করে বয়সের ওপর। রুটিন না মেনে চলা, অ্যালকোহল বা উত্তেজক কিছু সেবন, যেমন কফি বা কোনো এনার্জি ড্রিঙ্ক, অ্যালার্ম ঘড়ি বা দিনের আলো এমন সব কিছুই প্রাত্যহিক জীবনচক্রকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন বা এনএসএফ বলছে, প্রত্যেকের জীবনযাপন আসলে তার ঘুমের চাহিদা বুঝতে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বয়স অনুসারে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
নবজাতক বা ৩ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যদিও ১১ থেকে ১৩ ঘণ্টাও যথেষ্ট হতে পারে। তবে কোনোভাবেই ১৯ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। যেসব শিশুদের বয়স ৪ থেকে ১১ মাস তাদের কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা আর সর্বোচ্চ ১৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। শিশুদের বয়স ১/২ বছর হলে ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমানোই যথেষ্ট।
৩-৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব বয়সী বাচ্চাদের ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। আর ৬-১৩ বছর বছর বয়সী বাচ্চাদের ৯-১০ ঘণ্টার ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছে এনএসএফ। টিনএজ (১৪-১৭ বছর) বছর বয়সীদের ৮-১০ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন। প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ (১৮-২৫ বছর) বছর বয়সীদের ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
প্রাপ্তবয়স্ক (২৬-৬৪) বছর বয়সীদের ঘুম প্রাপ্তবয়স্ক তরুণদের মতোই। অন্য বয়স্ক (৬৫ বা তার বেশি বছর) লোকদের ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম আদর্শ। কিন্তু ৫ ঘণ্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়।
এনএসএফ’র ঘুম বিশেষজ্ঞরা পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে করণীয় সম্পর্কে একটা তালিকাও প্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা প্রথমেই ঘুমকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছেন। নিচের টিপসগুলিও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে তারা।
• ঘুমের নির্ধারিত সময় মেনে চলা
• নিয়মিত ব্যায়াম
• বেডরুমের আদর্শ তাপমাত্রা, সাউন্ড ও লাইট
• আরামদায়ক বিছানা ও বালিশ
• অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন না নেয়া
• শয্যায় যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করা ইত্যাদি
ইউএইচ/

