Site icon Jamuna Television

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ, এবারের প্রতিপাদ্য “আমার মাঝেই শান্তির সূচনা”

বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকাকে সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের বীর সেনানীরা। বিরোধপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী হিসেবে ব্লু হেলমেটে জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে লড়ছেন শত্রুদের বিরুদ্ধে। সংঘর্ষে আহত কিংবা নিহত হলেও শান্তির প্রশ্নে চির উন্নত মম শির। প্রতিবারের মতো এবারও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য “আমার মাঝেই শান্তির সূচনা”।

২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। সংঘাতপূর্ণ পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী কার্যক্রম পরিচালনা করছিল বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে শুরু হয় সংঘর্ষ। সাহসিকতা ও পেশাগত দক্ষতার সাথে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে বাংলার সেনারা। কিন্তু সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের পুতে রাখা ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস-আইইডি বিস্ফোরণে তিনজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী শহীদ হন, আহত হন ৪ জন।

আহতদের একজন বিশ্ব শান্তি রক্ষার অকুতোভয় যোদ্ধা মেজর শেখ আহমেদ জাদীদ। যিনি সেই দুর্ঘটনার পর হারিয়েছেন এক পায়ের শক্তি, রয়েছে নানা শারিরীক ও মানসিক ট্রমা। তবে দমে যাননি কখনো।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর শেখ আহমেদ জাদীদ বলেন, গ্রাউন্ডের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের লোকেশনটা ছিল বামে। বাম থেকে ডানে আসার প্লান ছিল। মেইন ট্রাকে আসার সময়, ওই পয়েন্টেই বিস্ফোরণটা হয়।

মেজর জাদীদের মত মুহূর্তেই চোখের সামনে সহকর্মীদের মৃত্যুতে এখনও শোকে কাতর ওই অভিযানে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন। সেদিনের সেই ঘটনা মনে করে আজও শিউরে ওঠেন কর্পোরাল মহিম উদ্দিন, সৈনিক সবুজ আহমেদ আর সৈনিক সারোয়ার হোসেন।

এ দুর্ঘটনার আরেক সাক্ষী কর্পোরাল মো. মহিম উদ্দিন বলেন, যখন আমাদের জ্ঞান ফেরে, তখন আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা আহত হয়েছি কিন্তু বেঁচে আছি। এ ঘটনায় আমার মেরুদণ্ডের হাড় তিনটা ভেঙে গেছ।

সেদিনের স্মৃতি মনে করে সৈনিক সবুজ আহমেদ বলেন, এ ঘটনার পর ভয়ে আতঙ্কে কত রাত যে আমার না ঘুমিয়ে কেটে গেছে আসলে ভাষায় বোঝানোর মতো না।

মিশন এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৬৭ জন বাংলাদেশি বীর সন্তান নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং ২৬৯ জন আহত হয়েছেন।

এটিএম/

Exit mobile version