Site icon Jamuna Television

মতাদর্শে এখন বিভক্ত তুরস্ক, নতুন কী চ্যালেঞ্জ আসছে এরদোগানের?

মতাদর্শের দিক থেকে তুরস্ক এখন বিভক্ত। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এলেও নির্বাচনের ফলাফলে বিষয়টি স্পষ্ট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, স্থানীয় নির্বাচনে সংস্কারপন্থীরা ক্ষমতা দখল করতে না পারলে মেরুকরণ বাড়বে। এদিকে, অর্থনীতিবীদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির লাগাম না টানলে এরদোগান সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে জনরোষ। খবর বিবিসির।

তৃতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার পর ভাষণে এরদোগান বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে যেসব সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোর সমাধনকে অগ্রাধিকার দেবে নতুন সরকার। তাছাড়া, ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গোটা দেশেও চালানো হবে সংস্কার। বিষয়গুলো কষ্টসাধ্য, তবে অসম্ভব নয়। আস্থা ও স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে তুরস্কে গঠন করা হবে শক্তিশালী অর্থনীতি।

বিজয় ভাষণেই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং জাতিগত বিভেদের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এরদোগান। কারণ, ব্যালট বাক্সেই জনরোষের আঁচ বুঝতে পেরেছিলেন তিনি।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শিগগিরই নীতিগত পরিবর্তন না আনলে জাতিগত বা লাগামহীন মূল্যস্ফীতি ইস্যুতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে এরদোগান সরকারকে।

এ বিষয়ে কাদির হাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোলি ওজেল বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্পষ্ট করে দিলো, তুরস্ক সমান দু’ভাগে বিভক্ত। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। যা ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধির পথে বড় বাধা। স্থানীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই মেরুকরণ মিটবে না। অবশ্য, প্রেসিডেন্ট শাসন থেকেও বেরিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ এই ব্যবস্থার ওপর আমরা পুরোপুরি নির্ভরশীল।

মুদ্রাস্ফীতিতে লাগাম টেনে ধরার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তুরস্কের অর্থনীতিবীদ সেলভা বাহার বাজিকি বলেন, গত বছর শিথিল মুদ্রানীতি গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার কারণে, অতীতের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি মূল্যস্ফীতি দেখে তুরস্ক। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তুর্কিরা। তার ওপর ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে দেশটির একাংশ। পরিস্থিতি মোকাবেলায়, সুদের হার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে হবে এরদোগান প্রশাসনকে। অন্যথায় কঠিন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হতে হবে এরদোগানকে।

তুরস্কে প্রথমবারের মতো নির্বাচন গড়িয়েছে রান-অফ বা দ্বিতীয় ধাপে। যাতে, ৫২ দশমিক ২ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ কামাল কিলিচ দারোগলুকে ভোট দেন ৪৮ ভাগের মতো তুর্কি। তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, রক্ষণশীল বনাম উদার নৈতিকতার বিবাদ। যা এবার গড়াবে অনেক দূর পর্যন্ত।

এসজেড/

Exit mobile version