Site icon Jamuna Television

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার সুনির্দিষ্ট পথ নকশা নেই বাজেটে, অর্থনীতিবিদদের মত

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি প্রায় চার ভাগ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু কীভাবে সম্ভব- সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পথ নকশা নেই। খাদ্যপণ্যে নতুন করে শুল্ক বাড়েনি। কিন্তু বর্তমান অবস্থাতেও কমছে না দাম। বলা হচ্ছে, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলে প্রভাব পড়বে স্থানীয় বাজারে। কিন্তু উল্টো পথে চলছে বাজার। ডলার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনার ব্যাপারেও তেমন দিক নির্দেশনা নেই। ভোক্তারা বলছেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে বেঁচে থাকাই কঠিন হবে।

বিশ্ববাজারে কমতির দিকে পণ্যমূল্য। কিন্তু স্থানীয় বাজারে তার তেমন প্রভাব নেই। প্রতিদিনই বাড়ছে কোনো না কোনো পণ্যের দাম। নিদিষ্ট আয়ের মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। সংসার চালাতে ঘাটতি অর্থের যোগান দিতে ভাঙতে হচ্ছে সঞ্চয়।

এক ক্রেতা বলেন, ২ কেজি চালের দাম ১২০ টাকা। আরেকটু বাজার করলেই টাকা শেষ। মাছ কেনাই যায় না। মাছের দাম অনেক বেশি। বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম কমলে ভালো হয়। কারণ, পণ্যের দাম বাড়লেও বেতন তো বাড়ে না।

অন্যদিকে, এক বিক্রেতা জানান, পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতারা দোকানে আসলেই জিজ্ঞেস করে, দাম কি প্রতিদিন বাড়ে!

এমন এক সংকটকালীন অবস্থায় বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছেন অর্থমন্ত্রী। বলা হচ্ছে, ৬ শতাংশের ঘরেই থাকবে অর্থনীতির এই সূচক। কিন্তু চলতি অর্থবছরের বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, এখন তার চেয়ে অন্তত ৪ ভাগ বেশি হয়েছে মূল্যস্ফীতির হার। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, সেটিই এখন প্রশ্ন।

সানেম’র গবেষণা পরিচালক সায়মা হক বিদিশা বলেন, মূল্যস্ফীতিকে নাগালের মধ্যে রাখার জন্য আরও অনেক পদক্ষেপের দরকার রয়েছে। চলতি বাজেটেও আমরা দেখেছি, ব্যাংক থেকে যখন অনেক ঋণ নেয়া হয় তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই এটি নেয়া হয়। অর্থনীতিতে যখন অর্থের সরবরাহ বেড়ে যায়, সরকার যখন ব্যাংকিং খাত যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় মুদ্রার সরবরাহ তখন বেড়ে গিয়ে সেটি মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেট প্রস্তাবে তেমন কোনো পথ নকশা নেই। অর্থাৎ, কোন কৌশলে স্বস্তি দেয়া হবে তাও তুলে ধরা হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমার প্রভাব নেই। বলা হচ্ছে, মুদ্রানীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ থাকা দরকার। সানেম’র গবেষণা পরিচালক সায়মা হক বিদিশা বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার যে মূল্যমান, সেটাকে পরিবর্তন করার জন্য মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছি।

সরকার মনে করে, বিশ্ববাজারে কমবে জ্বালানি তেলের দাম। এতে স্বাভাবিক হবে খাদ্য ও সারের মূল্য। আর, এর সুফল হিসেবে কমে আসবে মূল্যস্ফীতি।

/এম ই

Exit mobile version