Site icon Jamuna Television

বাঁধে হামলা ঝুঁকিতে ফেলেছে জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে, ইইউ বলছে যুদ্ধাপরাধ

ইউক্রেনে পরিবেশ হত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধ করেছে রাশিয়া। নিপ্রো নদীর বাঁধ ধ্বংসের পর মস্কোর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে পানি সরবরাহসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয় বাঁধটি। এছাড়া বন্যার কারণে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধাপরাধ।

সোভিয়েত যুগে তৈরি প্রায় ১শ ফুট উঁচু নোভা কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস হওয়ার পর মুহূর্তেই পানির নিচে তলিয়ে গেছে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ। হাজার হাজার মানুষ ঘর ছাড়া হওয়ার পাশাপাশি আকস্মিক প্লাবনে মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন প্রাণীরও।

শুধু বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা নয়, এবার মস্কোর বিরুদ্ধে উঠেছে পরিবেশ হত্যার নতুন অভিযোগ। কিয়েভ বলছে, কৃত্রিম দুর্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ইউক্রেনকে মানবিক বিপর্যয়ে ফেলতে চাচ্ছে মস্কো। বিশ্লেষকরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক স্থাপনায় এমন হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল।

আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ আলেসান্দ্রা স্পাডেরো বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে, যেকোনো সশস্ত্র সংঘাতে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। বাঁধে হামলা বেসামরিকদের মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলেছে। অঞ্চলটিতে মানবিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাজেই এই হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল।

ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করা হয়, এমনকি এই পানির ওপর জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রও নির্ভরশীল।

এদিকে বিস্ফোরণের ফলে, নিপ্রো নদীতে দেড়শ টন তেল ছড়িয়ে পড়ার দাবি করেছে কিয়েভ। বলছে, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কৃষ্ণ সাগরেও। যদিও হামলার দায় স্বীকার করেনি মস্কো, তবে পশ্চিমারা পুতিন প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলছে।

এ ব্যাপারে ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউরোপে শান্তি নষ্ট করে দিয়েছে। কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস করে এবার হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এছাড়া পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে রাশিয়া। এই জঘন্য কাজ আবারও রাশিয়ার বর্বরতাকে সামনে এনেছে।

এদিকে ইইউ কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেন, অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে এ ধরণের বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। পুতিন এবার বাঁধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। এর আগে ক্ষুধা, শীতকেও অস্ত্র বানাতে দ্বিধা করেননি তিনি।

আন্তর্জাতিক মহল বলছে, বাঁধে এই বর্বরোচিত হামলা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আরও জোরালো করেছে।

এটিএম/

Exit mobile version