Site icon Jamuna Television

৬১৭ রানে পিছিয়ে আফগানিস্তান, জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরির পর মুমিনুল হকের স্বস্তির শতরান। প্রথম ইনিংসের ২৩৬ রানের বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। আর তাতেই আফগানদের সামনে দাঁড়ায় ৬৬২ রানের হিমালয়সম টার্গেট। ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান তুলেছে সফরকারীরা। আহত হয়ে আফগান অধিনায়ক মাঠ ছাড়ায় পাহাড়সম এই লক্ষ্যকে আফগানদের সামনে অনতিক্রম্য মনে হতেই পারে। ৮ উইকেট হাতে রেখে আরও ৬১৭ রান করতে হবে সফরকারীদের।

নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। শরিফুল ইসলামের ফুল লেন্থের বল ফ্লিক করার চেষ্টা করলেও ব্যাটে লাগাতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরান। বল আঘাত হানে তার প্যাডে। শরিফুলের জোরালো আবেদনে সাড়া না দিয়ে পারেননি আম্পায়ার।

শরিফুলের পর আঘাত হানেন তাসকিন। প্রথম ইনিংসে কিছুটা খরুচে বোলিং করে উইকেটশূন্য থাকা এই ফাস্ট বোলার এবার প্রথম ওভারেই পেয়ে যান উইকেটের দেখা। ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠান আব্দুল মালিককে। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেন্থের ডেলিভারি কাভার ড্রাইভের চেষ্টা করেন মালিক। বল তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। ৫ রান করে ফেরেন আফগান এ ওপেনার।

ছবি: সংগৃহীত

এরপর তাসকিনের এক বাউন্সারে হেলমেটের নিচের অংশে আঘাত পান আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে শহীদি (১৩) চলে যান মাঠের বাইরে।

এরপর রহমত শাহকে সঙ্গে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেন নাসির জামাল। রহমত ১০ ও জামাল ৫ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। এরপর আলোকস্বল্পতার কারণে খানিকক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে তৃতীয় দিনের খেলা। এই মুহূর্তে আফগানিস্তান পিছিয়ে আছে ৬১৭ রানে। তারা দিন শেষ করেছে ২ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে।

এর আগে, মিরপুর টেস্টে দ্বিতীয় দিন যেখানে শেষ করেছিলেন, তৃতীয় দিন সেখান থেকেই শুরু করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান। ৩৭৬ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে এই জুটিতে সাড়ে চারশোর কাছাকাছি লিড নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে টাইগাররা। ১ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে বেশ ভালোই এগোচ্ছিলেন শান্ত-জাকির।

জাকিরের তুলনায় শান্ত একটু বাড়তি আক্রমণাত্মকভাবেই রান যোগ করতে থাকেন স্কোরবোর্ডে। দলকে দেড়শোর ঘরে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে শান্ত হাঁটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথেও। কিন্তু নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তিনি সঙ্গী হারান। রান আউটে কপাল পুড়ে জাকিরের। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়ে তাকে। ৭১ রানে আউট হন জাকির। 

ছবি: সংগৃহীত

সঙ্গী রান আউটে বিদায় নিলেও মুমিনুল হককে নিয়ে নিজের টানা দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন শান্ত। রহমত শাহ’র ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে সিঙ্গেল নিয়ে এই ক্রিকেটার পৌঁছে যান আরও একটি সেঞ্চুরিতে। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে বাংলাদেশের পক্ষে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তিটি ছিল শুধু মুমিনুল হকের। ক্রিকেট ইতিহাসের ৯১তম ব্যাটার হিসেবে এই কীর্তি এখন শান্তর। এরপর ১২২ রান নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে বেশি কিছু করতে পারেননি শান্ত। জহির খানের বলে অন সাইডে ব্যাট চালিয়ে হাশমতউল্লাহ শহীদির তালুবন্দি হন শান্ত। শেষ হয় শান্তর ১২৪ রানের ইনিংস। ভাঙে মুমিনুল হকের সঙ্গে তার ৮৬ রানের জুটি।

ছবি: সংগৃহীত

এরপর অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে জহির খানের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন মুশফিক। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলেই স্লগ সুইপে দারুণ এক ছয় মেরেছিলেন মুশফিক। পরের বলটি রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় ব্যাটে ঠিকঠাক করতে পারেননি তিনি। বল গ্লাভসে লেগে স্লিপে ক্যাচ হয়। এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ৬৭ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল।

৪৮ রান নিয়ে চা পানের বিরতিতে গিয়েছিলেন লিটন। সেখান থেকে ফিরেই জহির খানকে স্কুপ করে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। এরপর আজমতউল্লাহ আহমদজাইকে আপার কাটে চার মেরে ২৬ মাস আর ২৬ ইনিংস পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। খানিক বাদেই ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। লিটন ৬৬ ও মুমিনুল ১২১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।

/আরআইএম

Exit mobile version