Site icon Jamuna Television

স্ত্রীকে তালাক দিয়ে শ্যালিকাকে নিয়ে উধাও

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে গোপনে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অবুঝ দু’সন্তানকে ফেলে আপন শ্যালিকাকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে রবিউল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তি । প্রথমে স্ত্রীর কাছে সব গোপন রেখে তাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে রবিউল। পরে আত্মীয়-স্বজনরা এগিয়ে এলে তাদের উপরও চড়াও হয় সে। ঘটনার দু’মাস পর তালাকের বিষয়টি জানাজানি হলে রবিউল অপ্রাপ্ত বয়স্ক শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার ফকিরপাড়া গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ আলীর পূত্র রবিউল ইসলাম ২০১০ সালের ১২ আগস্ট সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর সৈনিকপাড়া গ্রামের আজর উদ্দিনের কন্যা রুজিনা আক্তার আকলিমার (২৭) সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ৮ বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। রবিউল ইসলাম চলতি বছরের ২৬ জুন গোপনে কুড়িগ্রাম নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে গিয়ে এফিডেভিট এর মাধ্যমে স্ত্রী আকলিমাকে তালাক দেয়। তালাকের নোটিশ স্ত্রী ও পৌর মেয়রকে দেয়ার বিধান থাকলেও সেটি গোপন রেখে স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে সে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রথমে অস্বীকার করে রবিউল। বেশি চাপ দিলে স্ত্রীর উপর চালায় নির্যাতন। এরপর সন্দেহ করার অজুহাতে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।

গৃহবধূ আকলিমা জানান, আমাকে পছন্দ করে এক প্রকার জোর করে বিয়ে করে রবিউল। বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে আসছিল। গত দু’মাস আগে কুড়িগ্রাম শেখ রাসেল পার্কে চ্যানেল আই কৃষক ঈদ আনন্দে অংশগ্রহণ করে আমরা সেরা জুটি হিসেবে পুরস্কৃত হই। আমার ছোট বোন ক্লাস এইটে পরে। সে নাবালক। বোনকে ফুসলিয়ে তাকে নিয়ে আত্মগোপন করে আছে সে। এদিকে লোকজন বলছে রবিউল আমাকে গোপনে এফিডেভিট করে তালাক দিয়েছে। আপনাদের কাছে কাগজ দেখে এখনো বিশ্বাস হতে চাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কমিশনার মোস্তফা কামাল পাশা জানান, বিবাহ হবার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বহুবার মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। সংসারটা টিকে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। আমি চাই আইনের শাস্তি পাক রবিউল।

নির্যাতিতা এই নারী সম্পর্কে কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রতিমা চৌধুরী জানান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও স্বামীর নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি আকলিমা। আমরা চাই রবিউলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হোক। স্ত্রীকে রেখে তার অনুমতি ব্যতিরেকে ছোট বোনের সাথে বাল্যবিয়ে করাটাও চরম অপরাধ। এছাড়াও তালাকের ব্যাপারেও সে প্রতারণা করেছে।

Exit mobile version