Site icon Jamuna Television

টাইটানিক অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ ৫ পর্যটক আসলে কারা?

ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ আটলান্টিক মহাসাগরে পাওয়ার দাবি করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছেই ডুবোযানটির সন্ধান মিলেছে বলেও দাবি তাদের। খবর বিবিসির।

টাইটানের আরোহীদের মধ্যে আছেন- ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হারডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহাজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান এবং ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটোন রুশ, অপরজন ফরাসি নাবিক পল হেনরি। কিন্তু ব্যক্তিগত অথবা পেশাগত জীবন কেমন ছিল তাদের?

টাইটানের পাঁচজন আরোহীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হলো হামিশ হারডিং। তিনি হলেন একজন ব্রিটিশ টাইকুন। মূলত হামিশ হার্ডিং এমন একজন অভিযাত্রী, যিনি বিমান চালনায় উৎসাহী। বিভিন্ন অভিযানে তার অতি আগ্রহ। শুধু তাই নয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘অ্যাকশান অ্যাভিয়েশন’র চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন হামিশ। তিনি একাধিকবার দক্ষিণ মেরু এবং একবার প্রাক্তন মহাকাশচারী বাজ অলড্রিনের সাথেও পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এর আগে, ২০২২ সালে ব্লু অরিজিনের মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণেও গিয়েছিলেন হামিশ। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, ৫৯ বছরের হামিশের ঝুলিতে তিন তিনটে ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ রয়েছে। এর আগে সমুদ্রের গভীরে মারিয়ানা ট্রেঞ্চে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়ে সকলের নজর কেড়েছিলেন তিনি।

সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ব্রিটিশ ধনকুবের লেখেন, বিশ্বরেকর্ড ভাঙা আর জেট বিমান নিয়ে ওড়ার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করতে চাই না আমি। তবে ডুবোজাহাজ ‘টাইটান’র এটাই ২০২৩ এর প্রথম ও শেষ সফর হতে চলেছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

টাইটানের আরোহীদের মধ্যে আছেন পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহাজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান। ব্রিটিশ ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ পাকিস্তানের সবচেয়ে ধনী পরিবারের একজন ছিলেন। শাহজাদা পাকিস্তানের বৃহৎ এগ্রো করপোরেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন, যেটি একটি বড় সার ফার্ম। শেহজাদা দাউদের স্ত্রী ক্রিস্টিনকে নিয়ে বাবা-ছেলে দু’জন ইংল্যান্ডের সারেতে থাকেন। দাউদ একজন ব্যবসায়িক উপদেষ্টা এবং প্রিন্স ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনালের বোর্ডেও কাজ করেন। অপরদিকে, শাহজাদা দাউদের ছেলে সুলেমান যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোর স্ট্র্যাথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, যেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলে প্রথম বর্ষ শেষ করেছিলেন।

সুলেমানের খালা এনবিসি নিউজকে বলেন, ১৯ বছর বয়সী সুলেমান বলেছিলেন যে, তিনি এই ভ্রমণ সম্পর্কে ‘আতঙ্কিত’ বোধ করছিলেন। শুধু বাবাকে খুশি রাখতেই এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

টাইটানের আরোহীদের মধ্যে আরেকজন হলেন প্রাক্তন ফরাসি নাবিক পল হেনরি। ৭৭ বছরের পল হেনরি নারজিওলেট এই অভিযানের নেতৃত্বের দায়িত্ব ছিলেন। তবে, ফরাসি নৌবাহিনীর প্রাক্তন ডুবুরি নারজিওলেটের আরও একটি পরিচয় রয়েছে। অনেকেই তাকে ‘মিস্টার টাইটানিক’ বলে ডাকেন। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ৭৫ বছর পর ১৯৮৭ সালে প্রথমবার এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ চালানো হয়। সেই অভিযানেরও সদস্য ছিলেন এই ফরাসি ডুবুরি।

টাইটানের আরোহীদের মধ্যে সর্বশেষ আরোহী হলেন স্টকটন রাশ। তিনি হলেন ওশেনগেট এক্সপিডিশনের সিইও। তার কোম্পানিই টাইটানিক অন্বেষণের কাজ করছিল। মূলত তিনি একজন অভিজ্ঞ প্রকৌশলী ছিলেন। এর আগে একটি পরীক্ষামূলক বিমান ডিজাইন করেছিলেন তিনি এবং অন্যান্য ছোট ডুবো জাহাজে কাজ করেছিলেন। রাশ ২০০৯ সালে ওশেনগেট কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, গ্রাহকদের গভীর সমুদ্র ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন রাশ।

এআই/ইউএইচ/

Exit mobile version