Site icon Jamuna Television

ঈদ যেখানে রূপকথার গল্প

সহিংসতার কারণে সুদান থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী।

দোড়গোড়ায় ঈদুল আজহা। ঈদের প্রস্তুতি এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। তবে অর্থমন্দা ও উচ্চমূল্যের কারণে ধরাশায়ী অনেক দেশই। অর্থ সংকটের কারণে অনেকেই কিনতে পারছেন না পছন্দসই কোরবানির পশু। তাছাড়া বিভিন্ন দেশে চলমান সহিংসতার কারণে উৎসবের আমেজের পরিবর্তে বিভীষিকাময় দিন হতে চলেছে ঈদ, এমনটিই মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। খবর আল জাজিরার।

সুদানে ১১ সপ্তাহ ধরে সহিংসতা চলায় চোখে যেন অন্ধকার দেখছেন দেশটির মানুষ। উৎসব-আনন্দের পরিবর্তে পরিবার-প্রিয়জনদের নিয়ে টিকে থাকাই একটি বড় চ্যালেঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বাস্তুচ্যুতদের।

সুদান থেকে পলাতক সাফিয়া জুমা আদম জানালেন সেই বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, ঈদ যেন এক রূপকথার কাহিনী হয়ে দাঁড়িয়েছে তার কাছে। সাফিয়া বলেন, গত ১৫ দিন ধরে তিন সন্তান নিয়ে হাইফা সীমান্তে আছি। কোনোরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। সুদান ফিরে যাওয়ার অবস্থা নেই, টিকিটের দামও আকাশছোঁয়া। আমি সন্তানদের ঈদের গল্প শোনাই। পরিবারের সাথে কতো আনন্দেই না কাটতো আমাদের দিন।

প্রতিবেশী দেশে সহিংসতার প্রভাব পড়েছে ফিলিস্তিনের কোরবানি পশুর হাটেও। আমদানি করা যায়নি ছাগল-ভেড়া। তাই গাজা উপত্যকার বাজারে দামও আকাশছোঁয়া। সুদানে চলমান যুদ্ধের কারণে, এবার সেদেশ থেকে কোরবানির পশু আনা যায়নি। সে কারণেই, এবছর দাম বেশ চড়া। ক্রেতারা পকেটে মুদ্রা নিয়ে আসছেন ঠিকই, কিন্তু পশু কিনে নিতে পারছেন না।

গাজার পশুর হাটে আসা এক ব্যক্তি জানান, এ বছর পশুখাদ্য, যাতায়াতের খরচ দুই-তিনগুণ বেড়েছে। যে ছাগল বা ভেড়া ৩০ হাজার মিসরীয় মুদ্রায় কেনা যেতো, সেটি এবার ৬০ হাজারেও মিলছে না। বাধ্য হয়েই অনেকে ভাগে কোরবানি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো ভুগছে চরম অর্থমন্দায়। মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান সহিংসতা। তাই মিসর-লেবানন-আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোয় কোরবানির জন্য পশু কিনতে ঘাম ঝরছে ক্রেতাদের।

আফগানিস্তানের এক ভুক্তভোগী নাগরিক জানান, চলতি বছর কোরবানির পশুর অনেক দাম। বেশিরভাগ মানুষ বেকার-দরিদ্র আর অভাবগ্রস্ত। তারা মাসে ১ থেকে ৩০০ মুদ্রা আয় করে। কিন্তু একটি পরিবার চালাতে ন্যূনতম ৫০০ আফগানি মুদ্রার প্রয়োজন।

পশু কিনতে হতাশ অপর একজন বললেন, একটি ভেড়ার দামই ৫ হাজার লিবীয় দিনার। আনুষাঙ্গিক পণ্য কিনতে খরচ হবে আরও ৪ হাজার দিনার। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে কেনা অসম্ভব। আমি ৪-৫টি হাট ঘুরেও কোরবানির পশু কিনতে পারিনি।

প্রসঙ্গত, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পালিত হবে ঈদুল আজহা। এদিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি দেবেন মুসল্লিরা।

এসজেড/

Exit mobile version