Site icon Jamuna Television

বিদায়ী অর্থবছরে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি; খাদ্যপণ্য কিনতে ভোগান্তিতে মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

তৌহিদ হোসেন:

বিদায়ী অর্থবছরের কোনো মাসেই মূল্যস্ফীতি, লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে আসেনি। যে কোনো পণ্য ও সেবা কিনতে গড়ে ৯ শতাংশের বেশি অর্থ লেগেছে নাগরিকের, যা এক যুগে সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে খাবারের দাম। পরিকল্পনা বিভাগ বলছে, সহসাই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া কঠিন। তবে অন্যান্য অনেক দেশ পারলেও বাংলাদেশ কেন পারছে না, সে প্রশ্ন গবেষকদের।

কয়েক বছর ধরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ঘুরপাক খাচ্ছে সাড়ে ৫ শতাংশের ঘরে। কাগজে-কলমে সে টার্গেট ধরে রাখা গেছে ২০২১ পর্যন্ত। কিন্তু গত অর্থবছরের কোনো মাসেই মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যের কাছাকাছি আসেনি। বাজারে গিয়ে দামের উত্তাপ ভালোই টের পেয়েছে মানুষ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, বিদায়ী অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.০২ শতাংশ; যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। সবশেষ প্রতিবেদনে জুনে মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে আবাসন, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি পরিষেবা; বিনোদন ও সংস্কৃতি, বাসাবাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তি ১১ ভাগ খরচ হয়েছে নাগরিকদের। বেড়েছে খাবারের দাম। জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৭৩ শতাংশ। অথচ, আগের মাসে এই হার ছিল ৯.২৪ শতাংশ। প্রশ্ন হচ্ছে, নিত্যপণ্যের দর নিয়ন্ত্রণে কতটা তৎপর সরকার।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণেই এই মূল্যস্ফীতি। আগের জায়গা বা তার কাছাকাছি ফিরে আসতে সময় লাগবে। উৎপাদন বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ যেটা বেড়েছে তা পুষিয়ে নিতে হবে। তার জন্য প্রযুক্তিগত অভিযোজন বা, কৃষকদের কাছে প্রযুক্তি পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

গত এক বছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। পাঁচ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে সোয়া চারে নামিয়ে এনেছে ভারত। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে, পণ্য ও সেবার দর নিয়ন্ত্রণে ভালো করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেপাল, ভুটান ও ভিয়েতনাম। তাহলে বাংলাদেশ পারছে না কেন?

এ প্রসঙ্গে সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, খুবই নির্দিষ্ট একটি কর্মপরিকল্পনার কথা উনারা বলবেন যাতে করে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা যাবে। এই অর্থবছরে যে দাম আছে তার উপরেও যদি ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয় তাহলে নিঃসন্দেহে দামের উচ্চস্তরেই আমরা থাকবো। সবার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এক নয়। আমরা আগে কেবল দরিদ্রদের কথা বলতাম। এখন বাচনভঙ্গি পরিবর্তন দরিদ্রদের সাথে সীমিত আয়ের মানুষ, মধ্যবিত্তদের কথাও বলতে হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।

/এম ই

Exit mobile version