Site icon Jamuna Television

রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে, দেখা যাচ্ছে নতুন উপসর্গ

রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি যখন খারাপের দিকে তখন শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে; যা চিকিৎসকদের জন্য উদ্বেগের। এবার শিশুদের মধ্যে সাধারণ উপসর্গের পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে কিছু নতুন উপসর্গ। চিকিৎসকরা দিচ্ছেন বাড়তি সতর্কতার তাগিদ।

রাজধানীর দনিয়ার বাসিন্দা তৃষার ১০ বছর বয়সী ছেলে ও ৪ বছর বয়সী মেয়ে একই সাথে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। দুই সন্তানের অসুস্থতায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তৃষার। তার সন্তানদের অসুস্থতা সম্পর্কে তৃষা বলেন, পেট খারাপ, পেট ব্যথা, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর জ্বর উঠে যায়। নাপা ট্যাবলেট, নাপা সিরাপ খাইয়ে সাময়িকভাবে জ্বর কমে। এরপর আবার আসে।

শিশুদের আক্রান্তের প্রবণতা বাড়ছে হু হু করে। নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সী শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুতে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সাঈদ শিমুল জানান, এ বছরে ডেঙ্গুর প্রবণতা হচ্ছে পেটের সমস্যা। অনেক শিশুই জ্বরের সাথে ডায়রিয়া ও বমি নিয়ে ভর্তি হচ্ছে।

এবার শিশুদের ডেঙ্গুর ধরনে জ্বর ,মাথা ব্যাথা, গায়ে ব্যাথার সাথে ডায়রিয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি শকে চলে যাওয়ার কেস স্টাডিও পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর বাবা বলেন, দুইদিন একদিনের বাচ্চাদেরও ডেঙ্গু হচ্ছে। কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার।

হাসপাতালের চিত্রটাও শঙ্কা জাগানোর মতো। মুগদা হাসপাতালে দেখা যায়, ৫৯ শিশু ভর্তি ডেঙ্গুতে, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ২৫ ভাগ। চিকিৎসকরা বলছেন, বাড়িতে কিছুদিন জ্বর নিয়ে ভুগতে থাকা শিশুরা হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো: নিয়াতুজ্জামান বলেন, শিশুদের এক্সপোজারটা বোধহয় একটু বিপজ্জনক জায়গায় চলে গিয়েছে। যে কারণে শিশু ভর্তির সংখ্যাটা বেশি। অনেক বাবা-মা জানেনই না তাদের বাচ্চার জ্বর। পরে হাসপাতালে টেস্ট করিয়ে দেখা যায় তার ডেঙ্গু। এ বছরের উপসর্গগুলো একেবারেই আলাদা। অনেক বাচ্চা নিউমোনিয়া নিয়ে আসছে। অনেক বাচ্চার বুকে পানি জমে গেছে। অনেক বাচ্চার হাত-পা ফুলে গেছে। অনেকের কিডনির রোগ।

যেসব শিশুরা একের অধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে তাদের জন্য ঝুঁকির মাত্রা বেশি বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা। অভিভাবকদের জন্য দিয়েছেন এ সময়ের জন্য কার্যকরী কিছু পরামর্শ।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সাঈদ শিমুল বলেন, রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পেটে তীব্র ব্যথা হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট অর্থাৎ, পেট ফুলে গেছে। অ্যাসাইটিস, যেটাকে পানি জমা বলে। এসব লক্ষণ যদি দেখা যায়, প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে গেলে কালবিলম্ব না করে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।

সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে। আর ঘরে শিশু থাকলে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের পরামর্শ চিকিৎসকদের।

/এম ই

Exit mobile version