Site icon Jamuna Television

অ্যান্ড্রু কিশোর না থাকার ৩ বছর আজ

অ্যান্ড্রু কিশোর (১৯৫৫-২০২০)

মারিয়া হোসেন:

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক সম্রাট হিসেবে খ্যাত কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী অ্যান্ড্রু কিশোর চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের জাদুতে মাতিয়ে রেখেছিলেন সংগীতপ্রেমীদের। ২০২০ সালের ৬ জুলাই কোটি কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান দেশের সঙ্গীত জগতের উজ্জ্বল এ নক্ষত্র। আজ তার ৩য় মৃত্যু বার্ষিকী।

১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্ম অ্যান্ড্রু কিশোরের। বাংলা গানের কিংবদন্তি এ সঙ্গীতশিল্পী ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামেও পরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তাকে বলা যেতে পারে এক মহাসমুদ্র। যেখানে তিনি সাঁতার কেটেছেন কয়েক দশক। ছয় বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের তালিম নিতে শুরু করেন অ্যান্ড্রু। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধকসহ প্রায় সব ধারার গানে রাজশাহী বেতারে তালিকাভূক্ত হন তিনি। প্লেব্যাকে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খান সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী’ গানের মাধ্যমে।

তার রেকর্ডকৃত দ্বিতীয় গান ছিল বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রে। তবে এ জে মিন্টু পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতীজ্ঞা চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গানটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহ সব অনুভূতির গানই তার কণ্ঠে পেয়েছে এক অনন্য মাত্রা। তার শত শত গান এখনও শোনা যায় মানুষের মুখে মুখে। এর মধ্যে, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কারে দেখাবো মনের দুঃখ’, ‘, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর’, ‘তুমি আমার জীবন’-সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান আজও তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

সংগীত ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ গায়ক বিভাগে আটটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ জিতেছেন প্রয়াত এ গায়ক। এছাড়া দুটি ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’ ও তিনটি ‘বাচসাস’ পুরস্কারসহ অ্যান্ড্রুর ঝুঁলিতে আছে অসংখ্য সম্মাননা।

শারীরিক অসুস্থতার জন্য ২০১৯ সালে এন্ড্রু কিশোরকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানেই ধরা পড়ে ক্যান্সার। কয়েকমাস পর চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলে ২০২০ সালে রাজশাহীতে নেয়া হয় তাকে। সে বছরই ৬ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন অ্যান্ড্রু কিশোর। আজ তিন বছর হয়ে গেল তিনি আর নেই। তবে ১৫ হাজারেরও বেশি গান গেয়ে আগের মতোই শ্রোতাদের মণিকোঠায় জীবন্ত হয়ে আছেন, থাকবেন চিরকাল।

/এসএইচ


Exit mobile version