Site icon Jamuna Television

সরকারি চাকুরেদের বেতন বৃদ্ধি: মূল্যস্ফীতি বাড়লে বেসরকারি কর্মীদের কী হবে

প্রতীকী ছবি।

রিমন রহমান:

উচ্চ মূল্যস্ফীতির জাতাকলে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। গেলো অর্থবছর জুড়েই ছিল এই প্রবণতা। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ে তাল মেলাতে পারছে না বড় সংখ্যক জনগোষ্ঠী। এমন অবস্থায়, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়িয়েছে সরকার। কিন্তু বেসরকারি খাতের বিপুল সংখ্যক চাকরিজীবীর বাড়েনি বেতন। সঞ্চয় ভেঙে দিন পার করছেন অনেকে। সরকারি চাকরিজীবিদের বেতন বাড়লে উস্কে যেতে পারে মূল্যস্ফীতি; যা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নতুন করে।

সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.৭৩ ভাগ। যা আগের মে মাসের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ, প্রকৃত দামের চেয়ে প্রায় ১০ ভাগ বেশি দামে পণ্য কিনছে ভোক্তা। মূল্যস্ফীতির এই হার অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। কমানোই যাচ্ছে না বাজারের উত্তাল; পণ্য কিনতে ক্রেতাদের বাড়ছে নাভিশ্বাস। এমন অবস্থায়, সরকারি চাকরিজীবিদের মূল বেতনের সঙ্গে দেয়া হবে ৫ ভাগ বিশেষ ইনক্রিমেন্ট।

তবে, বেতন বৃদ্ধির এই দৌড়ে নেই বেসরকারি খাত। শ্রম জরিপ অনুযায়ী, দেশে চাকরির বাজারে নিয়োজিত এখন প্রায় ৬ কোটি মানুষ। তার মধ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতেই কাজ করে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষ। করোনা এবং বৈশ্বিক নানান সংকটে স্বল্প সময়ে বাড়েনি বিপুল সংখ্যক এসব মানুষের বেতন। তাদের কণ্ঠেও ছিল এ নিয়ে হতাশা। বাড়িভাড়া, খাওয়াপড়া সব মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অগণিত মানুষ।

৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা মোট ১০ শতাংশ বাড়তি ইনক্রিমেন্টে ব্যয় বাড়বে ৪ হাজার কোটি টাকা। আর এই অর্থ বাজারে গেলে উস্কে যাবে মূল্যস্ফীতি। আর, এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে খাত ভিত্তিক বেতন বৃদ্ধির দাবি উঠলেও সক্ষমতার কথা বলে বাস্তবায়ন করছে না কেউ।

অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, উন্নত দেশগুলোতে পলিসি ইন্টারেস্ট রেট যেভাবে বেড়েছে, বাংলাদেশে সেভাবে বাড়েনি। সাম্প্রতিক সময়ে যা করা হয়েছে, ট্রেজারি রেটের উপর যে স্মার্ট ইন্টারেস্ট রেট করার পরেও কিন্তু লেন্ডিং ইন্টারেস্ট রেট খুব একটা বাড়বে না। আমি মনে করি, বেসরকারি খাতের কর্মীদের ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত।

বেসরকারি খাত উন্নয়নে অবকাঠামো এবং নীতিসহায়তা দেয় সরকার। তবে বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা হয় না। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বেসরকারি খাতের দায়িত্ব কেন আমাদের হবে? আমরা তো বেসরকারি খাত চালাই না। তারা নিজেরাই বলে, আমাদের স্বাধীনভাবে চলতে দেন, ব্যবসা করতে দেন। হস্তক্ষেপ করবেন না। জায়গা-জমি ঠিক করে দেন, রাস্তা বানান, বিদ্যুৎ দেন, পানি দেন। আমাদের কাজ করতে দেন। সরকার তো সেটাই করছে। বেসরকারি খাতে অনেক কোম্পানি আছে যাদের বেতন-ভাতা সরকারি থেকে বেশি।

/এম ই

Exit mobile version