Site icon Jamuna Television

মার্কিন দুই কূটনীতিকের ঢাকা সফর; গুরুত্ব পেতে পারে নির্বাচন ও মানবাধিকার ইস্যু

মাহফুজ মিশু:

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে ঢাকা আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। মূলত আসন্ন নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নীতিনির্ধারকদের সাথে কথা বলবেন তারা। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবও স্পষ্ট হতে পারে এই সফরে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব ও চীন-রাশিয়ার বিপরীতমুখী অবস্থান সতর্কভাবে সামাল দিতে হবে বাংলাদেশকে।

নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই দিল্লি সফর করলেন মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া। সে সময় দিল্লিতে ছিলেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও। তিব্বতের ধর্মীয় নেতা দালাইলামার সাথে বৈঠক ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে কথা বলেছেন তারা।

উজরা জেয়ার সাথে চারদিনের সফরে ঢাকা আসছেন দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডোনাল্ড লু। সাম্প্রতিক সময়ে এটি তার দ্বিতীয় ঢাকা সফর। দিল্লি হয়ে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের ঢাকায় আসা কী বার্তা দিচ্ছে, সে সম্পর্কে কথা বলেছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা অনেক বেশি দ্বিপাক্ষিক। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিদ্যমান তার মূল্যায়ন নিশ্চিতভাবেই করা হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়েই বেশি উচ্চকিত থাকে। যেহেতু তিনি এই দায়িত্বে আছেন সেই বিবেচনায় তার দায়িত্বের অংশ হিসেবেই তিনি এ সম্পর্কে আলোচনা করবেন।

মে’র শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে নির্বাচন ইস্যুতে কঠোর মনোভাব স্পষ্ট করেছে ওয়াশিংটন। যদিও বিবৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছে রাশিয়া-চীন, এমনকি ইরানও। প্রশ্ন উঠেছে, বড় দুই শক্তির টানাপোড়েনে কোন পথে হাঁটবে বাংলাদেশ।

অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, নির্বাচন কেমন হবে, তার উপর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতি নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে আমাদের হিসেব করতে হবে কোন জায়গায় আমাদের সুবিধা বেশি, আমাদের জাতীয় স্বার্থ কোন ক্ষেত্রে সুনিশ্চিত হবে। ভবিষ্যতে কোন জোটে থাকলে আমরা আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বস্তিদায়ক অবস্থানে থাকবো।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, এটা যতটা না বাংলাদেশ কেন্দ্রিক, তার চেয়েও বাইরের পৃথিবীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি প্রতিফলন। সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা যদি সুষ্ঠু একটি সমাধান খুঁজে বের করতে পারি তাহলে আমার ধারণা, আমাদের এখন যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে তা থাকবে না। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা, তা এড়িয়ে যেতে পারবো।

যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, কোনো সংকট হবে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান জানান, চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নকে কারও ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না। চীনের সাথে যখন কথা বলা হয়, সেই আলোকেই কথা হয়। একই ব্যাপার ভারত কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

সফরকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও আইনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবে মার্কিন প্রতিনিধি দল। সফর শেষে ১৪ জুলাই ঢাকা ছাড়বেন তারা।

/এম ই

Exit mobile version