Site icon Jamuna Television

মশা মারতেও জালিয়াতি; নাম সিঙ্গাপুরের কিন্তু বিটিআই আনা হয়েছে চীন থেকে (ভিডিও)

আখলাকুস সাফা:

এডিস নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আনা বিটিআই আসল নয়। প্যাকেটের গায়ে উৎপাদনকারী হিসেবে সিঙ্গাপুরের বেস্ট ক্যামিকেলের নাম লেখা থাকলেও তা আনা হয়েছে চীন থেকে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানেরও কোনো হদিস নেই। কিউলেক্স মশার ছবি দিয়ে চালানো হয় এডিস নিধনের প্রচারণা। নেই কোনো ব্র্যান্ড, পাওয়া যায়নি পিএইচপি নম্বর, ব্যবহারবিধি কিংবা প্রয়োগের মাত্রা। এমনকি মেয়াদ ফুরানোর কোনো তারিখও নেই। দু’দফায় কার্যক্রম উদ্বোধন করলেও এখনও বিটিআই এর কার্যকারিতার প্রমাণ দেখাতে পারেনি ঢাকা উত্তর সিটি।

গত ৩ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে দিয়ে হৈচৈ করে উদ্বোধন করা হয় মশার লার্ভা নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আমদানি করা জৈব কীটনাশক, বিটিআই। প্রথম দফায় ৫ টনের কিছু বেশি আনা হয় প্রয়োগ করে দেখার জন্য। এরপর, গত ৭ আগস্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের বেস্ট ক্যেমিকেলের একজন প্রতিনিধির সামনে বিটিআই প্রয়োগের আরেকটি আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন মেয়র। প্রয়োগ হয় বিটিআই, কিন্তু এডিসের লার্ভা মরে গেছে এমন চিত্র দেখেনি কেউই।

একদিনের মধ্যে নিজেদের ফেসবুক পেজে বেস্ট ক্যামিকেল জানায়, তাদের মাধ্যমে পাঁচ টন বিটিআই লার্ভিসাইড সরবরাহ করা হয়নি। মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বেস্ট কেমিক্যালের নিযুক্ত কোনো পরিবেশকও নয়। এছাড়া মার্শাল অ্যাগ্রোভেট মি. লি শিয়াং নামে যাকে বেস্ট কেমিক্যালের এক্সপোর্ট ম্যানেজার এবং বিটিআই বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিল, তিনিও তাদের কর্মী নন।

এ নিয়ে ক্ষুব্ধ জাতীয় ডেঙ্গু কমিটির সাবেক সদস্য ও কীটত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ছবিটা কিউলেক্স মশার কিন্তু ছবিটা সঠিক বিটিআইয়ের না। তিনি আরও বলেন, এমন জালিয়াতি নতুন নয়, তবে ডেঙ্গুর এই ভয়াবহতার সময় এ ধরনের অপরাধ রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল।

এ নিয়ে ১৬ আগস্ট প্রশ্ন করা হয় মেয়র আতিকুল ইসলামকে। জালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করে মেয়র জানান, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রমাণ হলে ব্ল্যাকলিস্টেড করা হবে আমদানিকারককে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি কি বিটিআই এনেছি? হ্যাঁ বিটিআই এনেছি। আমি কি পেমেন্ট দিয়েছি? না পেমেন্ট দেই নাই। এখন এটা টেস্ট অবস্থায় আছে। মাত্র ৫ টন এনেছি। এই ৫ টনের জন্য ওই মার্শালকে একটি টাকাও দেয়া হয় নাই।

বলা হচ্ছিলো, বিটিআই এমন এক জৈব কীটনাশক যা নির্দিষ্ট পরিমাণে পানিতে মিশিয়ে লার্ভিসাইটে ছিটালে তা ব্যাকটেরিয়ায় পরিণত হয়। এডিসের লার্ভা তা খাবার মনে করে খায় আর দু’ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়। তবে বিটিআই জালিয়াতির কারণে তা কতটা কার্যকর হলো এ নিয়ে উঠলো বিশাল প্রশ্ন।

/এসএইচ

Exit mobile version